মিরর বাংলাদেশ
: ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে এখনো ৮০ লাখ গ্রাহক বিদ্যুৎ–বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছেন। এর মধ্যে ৬০ লাখ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের গ্রাহক। া গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
নসরুল হামিদ আশা প্রকাশ করে বলেন, বিদ্যুৎ–বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকা গ্রাহকদের মধ্যে ৭০ শতাংশ মঙ্গলবার বিকেল নাগাদ সংযোগের আওতায় আসবেন। আজ বুধবারের মধ্যে পরিস্থিতি পুরোপুরি ঠিক হয়ে যাবে। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে শেষ বিকেলে ঝড়ো বাতাস ছিল প্রবল। সোমবার বিকেলে খুলনার কয়রা উপজেলার মদিনাবাদ এলাকায় ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের অগ্রভাগ গত সোমবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ উপকূলে আঘাত হানে। মূল কেন্দ্র উপকূলে আঘাত হানে রাত নয়টায়। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ঝোড়ো বাতাস ও বৃষ্টি হয়।
ঝোড়ো বাতাসে অনেক জায়গায় বিদ্যুতের খুঁটি ও সঞ্চালন লাইনের ক্ষতি হয়। অনেক এলাকা বিদ্যুৎ–বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ঘূর্ণিঝড়টি চলে যাওয়ার পর বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুৎ ফিরতে শুরু করে।
প্রতিমন্ত্রী আরও জানান, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে দেশের বিভিন্ন এলাকায় গাছপালার ডাল ও বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে, তার ছিঁড়ে বৈদ্যুতিক লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে অনেক জায়গায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘিœত হয়েছে। লাইন মেরামতে বিদ্যুৎকর্মীরা সর্বাত্মক কাজ করছেন।
তিনি বলেন, কোথাও বৈদ্যুতিক লাইনে ভাঙা গাছপালা কিংবা তার ছিঁড়ে পড়ার তথ্য থাকলে সংশ্লিষ্ট বিদ্যুৎ অফিসকে অবহিত করার জন্য সবাইকে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো। আশা করছি সবার সহযোগিতায় দ্রæততম সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত সব এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হবে।
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে সারা দেশে ৮০ লাখ গ্রাহক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছেন। মঙ্গলবার বিকালের মধ্যে ৭০ শতাংশ এবং বুধবারের মধ্যে শতভাগ বিদ্যুৎ কানেক্টিভিটির আওতায় চলে আসবে। এই তথ্য উল্লেখ করে নসরুল হামিদ জানান, বিতরণ সংস্থা আরইবি, বিপিডিপি, ওজোপাডিকো ও নেসকো’র গ্রাহকরা রয়েছেন এর মধ্যে। লাইন ঠিক না করা পর্যন্ত সেসব এলাকায় বিদ্যুৎ দেওয়া যাবে না।
তিনি বলেন, বিতরণ সংস্থার কর্মীরা দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা কাজ করছেন। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে ভোলা, পটুয়াখালী, চাঁদপুর, ল²ীপুর, ফেনী, নোয়াখালী ও চট্টগ্রামে। বেশ কিছু উপকেন্দ্রে পানি উঠে গেছে। ট্রান্সফরমার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এদিকে দরকার হলে দিনের বেলায় বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হবে না বলে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী যে বক্তব্য দিয়েছেন, একে ভবিষ্যৎ নিয়ে ‘শঙ্কার কথা’ বলেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তিনি মনে করেন, বিদ্যুৎ নিয়ে এত শঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে দেশের বিদ্যুৎ পরিস্থিতির তথ্য জানাতে এ ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়। এর আগে গত রোববার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বিদ্যুৎ পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন।
উপদেষ্টার ওই বক্তব্যের বিষয়ে সাংবাদিকেরা জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ‘যে কথাটি আসছে, সেটি শঙ্কার কথা। ভবিষ্যতে শঙ্কার কথা। যদি দেশের অবস্থা, সারা বিশ্বের অবস্থা খুব খারাপের দিকে যায়, তাহলে শঙ্কার অবস্থা আছে। শঙ্কার অবস্থা তো মাথার পেছনে আছে। তবে আমি মনে করি, এত শঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। আমরা চেষ্টায় আছি, ভালো অবস্থায় যাব। এখন যে চ্যালেঞ্জ আসছে, ইনশা আল্লাহ সেটি মোকাবিলা করতে পারব।’
কত দ্রুত সময়ের মধ্যে লোডশেডিং থেকে বেরিয়ে আসা যায়, সেই ব্যবস্থার দিকে যাচ্ছেন বলে জানান প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘ধীরে ধীরে মনে হয় ভালো অবস্থায় যাব। আমরা মনে করছি, কয়েক মাসের মধ্যে একটি ভালো অবস্থানে চলে যাব