স্বৈরাচারের মাথা পালিয়ে গেছে কিন্তু তাদের লেজ রয়ে গেছে, সতর্ক থাকতে হবে : তারেক রহমান

138

* নারায়ণগঞ্জ বিএনপির রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা কর্মসূচি বিষয়ক কর্মশালা

মিরর বাংলাদেশ :
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, স্বৈরাচারের মাথা পালিয়ে গেছে কিন্তু তাদের লেজ রয়ে গেছে। কিছু ছোট মাথা পালিয়ে গেছে কিন্তু শরীরের লেজ কিন্তু অবশিষ্ট রয়ে গিয়েছে। তারা কিন্তু ভেতর ভেতর ষড়যন্ত্র করছে। তাদের বিরুদ্ধে সচেতন থাকতে হবে। আমাদের ভেতরেও এজেন্ট ঢুকে গেছে। তাদের বিরুদ্ধেও আমাদের সোচ্চার হতে হবে। কেউ যদি ভাবে প্রতিপক্ষ পালিয়েছে, নির্বাচন সহজ হবে, তা না। নির্বাচন অনেক অনেক কঠিন হবে। জনগণের সমর্থন নিয়ে আমরা এ নির্বাচন পার করতে চাই।
মঙ্গলবার বিকেলে নাসিক ১ নং ওয়ার্ডের হীরাঝিল এলাকাস্থ গিয়াসউদ্দিন ইসলামিক মডেল কলেজ প্রাঙ্গণে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আয়োজিত রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা কর্মসূচি বিষয়ক কর্মশালার আয়োজনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এমন বার্তা দেন।
এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক এমপি ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নেত্রী রেহানা আক্তার রানু, বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার সম্পাদক ও যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, স্বেচ্চাসেবক দলের সাবেক সভাপতি মরহুম শফিউল বারী বাবুর স্ত্রী ও সামাজিক সংগঠন দর্পনের সভাপতি বিথিকা বিনতে হোসাইন, বিএনপি মিডিয়া সেলের আহবায়ক অধ্যাপক ডা. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভূইয়া দিপু, আজাহারুল ইসলাম মান্নানসহ নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির বিভিন্ন ইউনিটের নেতারা কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, আগামীর যে নির্বাচন হবে, আমি ১০০% গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি। আপনারা যদি মনে মনে ভেবে থাকেন যে এখানে প্রধান প্রতিপক্ষ নাই, অথবা দুর্বল হয়ে গেছে, নির্বাচন খুব সহজ হবে। নো নো নো এন্ড নো এই নির্বাচন অতীতের যেকোনো নির্বাচন থেকে অনেক অনেক কঠিন হবে। তাই নিজেদেরকে প্রস্তুত করুন। আগামীর নির্বাচনে জনগণের সমর্থন নিয়ে নির্বাচনের ফুল ছাড়া আমরা যেনো পার হতে পারি। সেইভাবে নিজেদেরকে প্রস্তুত করুন।
তারেক রহমান বলেন, “মানুষ যখন জানে আপনি বিএনপির রাজনীতি করেন তখন মানুষ আপনাদের সালাম দেয়, জিজ্ঞেস করে, ভাই নির্বাচন কবে হবে। ব্যবসায়ীরা বলেন, ভাই নির্বাচন কবে হবে, নইলে তো ব্যবসা ঠিকমতো হচ্ছে না। এটা আপনাকে জিজ্ঞেস করছে, কারণ মানুষের প্রত্যাশা আপনাদের কাছে। তাদের বিশ্বাস বিএনপি ভালো কিছু করতে পারবে।

 


বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আরও বলেন, “একটি রাজনৈতিক দলের সবচেয়ে বড় সফলতা হলো, মানুষের আস্থা অর্জন করা। আপনার মতো অনেক মানুষই তো আছে, কয়জনের সাথে মানুষ এভাবে কথা বলছে। আপনার সাথে এমন ব্যবহার করছে, কারণ আপনি বিএনপি করেন। আপনার কাজকর্মের সাথে তাদের ভবিষ্যৎ জড়িত।”
তিনি আরও বলেন, “মানুষের আস্থা অর্জনই একটি রাজনৈতিক দলের সবচেয়ে বড় সফলতা। এই বিশ্বাস এই আস্থা ধরে রাখার দায়িত্ব জনগণের নয়। এই আস্থা ধরে রাখা আমাদের সকলের দায়িত্ব। আপনার এলাকায় আপনাকে দিয়ে মানুষ বিএনপিকে বিচার করবে। আপনি ভালো হলে বিএনপি ভালো, আপনি খারাপ হলে বিএনপি খারাপ। আপনাদের দিয়েই মানুষ বিএনপিকে বিচার করবে।”
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, “যারা অপকর্ম করবে শক্তহাতে সেই লোকগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। আপনারা আজ এখানে নেতা হিসেবে এসেছেন। আপনাদের অধীনে অনেক লোক আছে। খেয়াল রাখবেন নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য কেউ যেন দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে না পারে।”
তিনি বলেন, আজ আমাদের ৩১ দফার কর্মশালা পর্ব, এটা তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলার জন্য। এর আগে আমরা কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীদের সাথে ও বিভাগীয় পর্যায়ে এই কর্মসূচি করেছি। আপনারা সারাদিন যে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেছেন, এর সবগুলোই ছিল দেশ ও দেশের মানুষের জন্য। আপনারা সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলছেন, মিশছেন, দেখছেন। আপনারা জানেন কীভাবে জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে মানুষ রাজপথে নেমে এসেছিল। তাদের জন্যই এই ৩১ দফা।
তারেক রহমান বলেন, বিএনপিকে মানুষ পছন্দ করে এটা অনেকের হিংসার কারণ হিসেবে দাড়িয়েছে, অনেক রাজনৈতিক দলের হিংসার কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। অনেক ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। আপনারা সবসময় দেখেছেন, সবসময় খেয়াল করে দেখুন যারা এ দলের সাথে বহুবছর ধরে জড়িত আছেন।
তিনি বলেন, শহীদ জিয়ার আমল থেকে যুক্ত রয়েছেন দলের সঙ্গে। দেখে আসছেন ৮১ সালের আগে থেকে কিভাবে জাতীয়তাবাদি দল বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। দেশের ভেতর এবং দেশের বাহিরে। তাই ষড়যন্ত্র কিন্তু থেমে নেই। এই দলের বিরুদ্ধে যখন ষড়যন্ত্র হবে তখন ধরে নিতে হবে ষড়যন্ত্র শুধু এই দলের বিরুদ্ধেই না সেটা বাংলাদেশের বিরুদ্ধেও।
বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য তারেক রহমান বলেন , বিএনপি নেতাকর্মীর কাছে মানুষ নির্বাচনের কথা জিজ্ঞেস করার মূল কারণ তাদের আস্থা আর প্রত্যাশার জায়গা বিএনপি। অধিকাংশ মানুষই বিএনপির প্রতি তাকিয়ে থাকে। আপনাদের প্রতি যখন কোটি মানুষের প্রত্যাশা থাকবে তখন দায়িত্ব অনেক বড় হবে। জনগণকে সঙ্গে রাখুন, জনগণের সাথে থাকুন। আমরা আমি-ডামি নির্বাচনে বিশ্বাসী না। আমরা গনতন্ত্রে বিশ্বাসে। নিশিরাতের নির্বাচন থেকে মানুষ যখন নিজের ভোট দিতে পারবেন তখন তারা কেনো ভোট দিবে?।
বিএনপি নেতাদের হুশিয়ারি করে তিনি বলেছেন, নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্যে যদি দলীয় কোনো ব্যক্তি চেষ্টা করে তাকে শক্ত হাতে প্রতিহত করতে হবে। যারা নিজের লাভের জন্য দলের বদনাম করবে তাদেরকে যারা নেতৃত্বে আছেন সেইসব নেতাকরা শক্ত হাতে ব্যবস্থা নেওয়া লাগবে। এটা আমরা আপনাদের প্রতি নির্দেশনা রয়েছে। জনগণের সমর্থন আমাদের মূল কাজ। তাদের সমর্থন আমাদের প্রয়োজন। আমাদের সাথে জনগণ না থাকলে আমরা স্বার্থক হবো না।