জাতীয় পার্টিকে ২৬ শরীকদের ৬ আসন ছাড়
মিরর বাংলাদেশ : ১৪ দলের শরিক ও মিত্র জাতীয় পার্টিকে ৩২ আসনে ছাড় দিয়েছে আওয়ামী লীগ। এই আসনগুলো থেকে রোববার মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে শরিক ও মিত্রদের সঙ্গে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের আসন সমঝোতা নিয়ে দোলাচলের অবসান ঘটল। রোববার বিকাল ৪ টায় আসন সমঝোতার বিষয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় দফতর থেকে ব্রিফ করা হয়।
দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া জানান, ৩২ আসন শরিক ও জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে জাতীয় পার্টিকে ২৬ আসনে এবং ১৪ দলকে ৬ টি আসনে ছাড় দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ২৬৩টি আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা নির্বাচন করছে বলে জানিয়েছেন দলটির দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ২৯৮ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়। এর মধ্যে ৫টি আসন ইসির বাছাইয়ে বাতিল হয়েছে। এছাড়া জাতীয় পার্টির (জাপা) জন্য ২৬টি এবং ১৪ দলীয় জোটের অন্য শরিকদের জন্য ৬টি আসন ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আওয়ামী লীগ।
আওয়ামী লীগ ২৬৩টি, জাপা ২৬টি এবং জোট শরিকদের ৬টি মিলে হয় ২৯৫টি আসন। তবে ৩০০ আসনের মধ্যে ইসির বাছাইয়ে বাতিল হওয়া বাকি ৫টি আসনে কারা প্রার্থী হচ্ছেন, সে বিষয়ে কিছু জানাননি বিপ্লব বড়ুয়া।
গতকাল ররাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশনের চিঠি নিয়ে যান আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া। পরে বেরিয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ১৪ দলের শরিকেরা নৌকা মার্কায় ভোটে অংশ নেবেন। আর জাতীয় পার্টির জন্য ছেড়ে দেওয়া আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। বিষয়টি ইসিকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনে আওয়ামী লীগের দেওয়া চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ দলগত ও জোটগতভাবে অংশগ্রহণ করবে মর্মে নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করা হয়েছিল। উক্ত চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছিল যে, জোটভুক্ত রাজনৈতিক দলসমূহ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচনি প্রতীক কিংবা তাদের স্ব স্ব দলের দলীয় প্রতীক ব্যবহার করতে পারবে এবং এ বিষয়টি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ তারিখের মধ্যে চূড়ান্তভাবে নিষ্পত্তি করা হবে। এমতাবস্থায় নিম্নোক্ত আসনগুলোতে জোটের প্রার্থী থাকার কারণে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের প্রত্যাহার করা হলো।’
এদিকে গতকাল বেলা সাড়ে তিনটার পর জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক বলেন, ২৮৩টি আসনে ভোটে থাকছে জাতীয় পার্টি। তবে আওয়ামী লীগের সঙ্গে কোনো জোট হয়নি। আসন সমঝোতা হয়নি। কিছু আসনের ক্ষেত্রে কিছু কৌশল রয়েছে। কী কৌশল সে বিষয়টি পরিষ্কার করেননি তিনি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। গতকাল রোববার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন।
যে ৩২ আসনে সমঝোতা
জাতীয় পার্টির সঙ্গে আওয়ামী লীগের সমঝোতা হয়েছে ঠাকুরগাঁও-৩, নীলফামারী-৩ ও ৪, রংপুর-১ ও ৩, কুড়িগ্রাম-১ ও ২, গাইবান্ধা-১ ও ২, বগুড়া-২ ও ৩, সাতক্ষীরা-২, পটুয়াখালী-১, বরিশাল-৩, পিরোজপুর-৩, ময়মনসিংহ- ৫ ও ৮, কিশোরগঞ্জ-৩, মানিকগঞ্জ-১, ঢাকা-১৮, হবিগঞ্জ-১, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২, ফেনী-৩, চট্টগ্রাম-৫ ও ৮ এবং নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে। এর মধ্যে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে আগে থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিল না।
১৪ দলের শরিকদের মধ্যে ওয়ার্কার্স পার্টি দুটি, জাসদ তিনটি ও জাতীয় পার্টি (জেপি) একটি আসন পেয়েছে। তাদের জন্য বগুড়া-৪, রাজশাহী-২, কুষ্টিয়া-২, বরিশাল-২, পিরোজপুর-২ এবং ল²ীপুর-৪ আসন ছেড়ে দিয়েছে আওয়ামী লীগ।
##