মোহাম্মদ নঈমুদ্দীন, সিনিয়র রিপোর্টার , রাইজিং বিডি :
গণমাধ্যম কর্মীদের সুরক্ষায় এতদিন কোনো আইন ছিল না, এখন আইন হয়েছে। দেরিতে হলেও গণমাধ্যমকর্মী (চাকুরি শর্তাবলী ) আইন বিল সয়সদে উত্থাপন করায় সরকারকে বিশেষ করে মাননীয় তথ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই।
এর মধ্যদিয়ে গণমাধ্যম কর্মীরা আইনী কাঠামোর মধ্যে চলে আসবেন। তবে আইনে গণমাধ্যমকর্মীদের অনেক ন্যয্য পাওনা ও সুযোগ সুবিধা কৌশলে বাদ দেওয়া হয়েছে। অনেক অসঙ্গতি রয়েছে। এটি সংশোধন করা না হলে সাংবাদিকরা বঞ্চিত হবেন। যে উদ্দেশ্যে আইনটি করা হয়েছে সে উদ্দেশ্যই হাসিল হবে না। বরং সাংবাদিকরা আগের মতই উপেক্ষিত ও বঞ্চিত হবেন। যার কারণে সাংবাদিকদের ক্ষোভ বাড়বে। তাই এটি দ্রুত সংশোধন করে সাংবাদিক বান্ধব আইনে পরিণত করতে হবে, যাতে সাংবাদিকরা এর সুফল পান।
নতুন আইনে অনেক অসঙ্গতি আছে, অনেক সুবিধা বাদ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে আগে বছরে দুটি গ্রেচুইটি ছিল সেখানে একটি রাখা হয়েছে। শ্রান্ত বিনোদন ছুটি বাবদ প্রতি তিন বছরে একমাস ছুটি সঙ্গে একমাসের বেতন ছিল সেটি কেটে এখন পনের দিন করা হয়েছে। বিভিন্ন ছুটি ছাটাই কমানো হয়েছে। কোনো গণমাধ্যম কর্মীকে চাকরিচুতি করতে হলে আগে তিনমাসের বেসিক দেওয়া হতো। এখন তা মাত্র একমাস করা হয়েছে। চাকরির ধরণ তিনভাগে ভাগ করা হলেও ওয়েজবোর্ড না হওয়া পর্যন্ত চাকরির অস্থায়ী সময়কাল কতদিন, শিক্ষানবিস কতদিন আর কতদিন পর স্থায়ী হবে তা আইনে নির্ধারণ করা হয়নি।
অসদাচরণের নামে টুনকো অজুহাতে বিনা বেতনে বিনা নোটিশে চাকরি থেকে বরখাস্তের বিধান রাখা হয়েছে। বরখাস্ত ধারায় নানা অসঙ্গতি রয়েছে।ওয়েজবোর্ড না হওয়া পর্যন্ত পত্রিকা ছাড়া অন্য গণমাধ্যমগুলোর জন্য ন্যুনতম বেতন বলতে কত টাকা সেটা নির্ধারণ করা হয়নি। আরও নানা সুযোগ সুবিধা আইনে কর্তন করা হয়েছে। বিশেষ করে নিয়োগ পত্র না দেওয়া, বেতন ভাতা নিয়ে তালবাহনা করা, কথায় কথায় চাকরিচ্যুত করাসহ গণমাধ্যম কর্মী আইন না মানলে মালিকের লঘুশাস্তির বিধান রাখা হয়েছে।
এক্ষেত্রে লঘুশাস্তির পরিবর্তে যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত করতে কমপক্ষে পাঁচ লাখ টাকা থেকে সর্বোচ্চ পঞ্চাশ লাখ টাকা জরিমানা, একইসঙ্গে পত্রিকার লাইসেন্স কিংবা টিভি রেডিও এবং অনলাইন পোর্টালের নিবন্ধন বাতিলের বিধান রাখতে হবে। বাকী সব অসঙ্গতি দূর করে সাংবাদিক বান্ধব আইন পাস করতে সময়ের দাবি। এজন্য সব সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। দ্রুত সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে দাবি আদায়ে জোরালো কর্মসুচি দিতে হবে । সাংবাদিকদের সব সংগঠনকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাবি আদায় করতে হবে ।
লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক। সাবেক আপ্যায়ন সম্পাদক ,ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি