পচন ধরেছে ৭খুনের ফাঁসির আসামী নুর হোসেনের পায়ে

316

নারায়ণগঞ্জ সংবাদদাতা : নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলার মৃত্যুদÐপ্রাপ্ত প্রধান আসামী নূর হোসেন পঙ্গুত্বের পথে। তার পায়ের ফোঁড়া রোগে ভুগছেন। সেই সাথে তার ডায়াবেটিসের পরিমাণও অনেক বেড়ে গেছে। উন্নত চিকিৎসা করা না হলে হয়তো পঙ্গুত্ববরণের দিকে এগিয়ে যাবে। যার কারণে উন্নত চিকিৎসার জন্য আদালতের কাছে আবেদন করেছেন নুর হোসেনের আইনজীবী অ্যাডভোকেট কামাল হোসেন।

বৃহস্পতিবার নুর হোসেনকে নারায়ণগঞ্জে আনা হলে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (দ্বিতীয়) সাবিনা ইয়াসমিনের আদালতে এই আবেদন করা হয়েছে। আদালত তার আবেদনের বিষয়টি আমলে নিয়ে পরবর্তীতে আদেশ দিবেন বলে জানিয়েছেন। এদিন নূর হোসেনের বিরুদ্ধে একটি অস্ত্র মামলার যাবজ্জীবন সাজা হয়েছে। সেই সাথে আরও দুইটি মামলায় ৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। আর এই সময়ে নূর হোসেন আদালতের এজলাসে বসা অবস্থায় ছিলেন। এ বিষয়ে নূর হোসেনের পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট কামাল হোসেন বলেন, নূর হোসেনের পায়ে ফোঁড়া হয়েছে। ফোঁড়া নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকার কারণে পা দিয়ে রক্ত ঝরছিল। আমরা আদালতকে বিষয়টি জানিয়েছি। আদালত মানবিক দিক বিবেচনা করে এজলাসে তাকে বসার অনুমতি দেন। তিনি আরও বলেন, তার ডায়াবেটিসের পরিমাণও অনেক বেশি। যার কারণে পায়ের ফোঁড়া ভালো হচ্ছে না। এই অবস্থায় আমার আসামী নূর হোসেনের উন্নত চিকিৎসা করা না হলে ভবিষ্যতে পঙ্গুত্ববরণের দিকে এগিয়ে যাবে। সেই সাথে কারা কর্তৃপক্ষেরও উন্নত চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করতে সক্ষম হবেন না। তাই আমরা আদালতের কাছে উন্নত চিকিৎসার আবেদন করেছি। আদালত বলেছেন বিষয়টি বিবেচনা করবেন। তবে সাথে সাথেই আমাদের আদেশ দেননি। নূর হোসেনের বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলায় যাবজ্জীবন কারাদÐকে ‘জুডিসিয়াল ইনজাস্টিস’ হিসেবে দাবি করেছেন তার পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট কামাল হোসেন। তিনি বলেন, এই অস্ত্র মামলায় নলেজ, কন্ট্রোল ও পজিশন নিরঙ্কুশভাবে প্রমাণিত হয়নি। রাষ্ট্রপক্ষ তা প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। আমরা এই রায়ে সন্তুষ্ট নই। রায়ের বিরুদ্ধে আমরা হাইকোর্টে আপিল করবো। অ্যাডভোকেট কামাল হোসেন বলেন, যখন অস্ত্র পাওয়া গেছে তখন ডিক্লেয়ার নূর হোসেন ভারতের দমদম কারাগারে ছিলেন। এটা সকলেই জানে। পুলিশ যখন কথিত উদ্ধার করে তখন আমার আসামী বাংলাদেশেই ছিল না। এটা স্পষ্ট অস্ত্রের বিষয়ে আসামীর নলেজ, কন্ট্রোল ও পজিশন কোনটাই ছিল না। অস্ত্র মামলায় সাজা দিতে হলে অস্ত্র সম্পর্কে আসামীর নলেজ, কন্ট্রোল ও পজিশন নিরঙ্কুশ হতে হয়। এখানে সেটা হয়নি। জেলা ও দায়রা জজ কোর্টের অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট মো. সালাহ উদ্দীন সুইট বলেন, ২০১৪ সালের ২০১৪ সালের ১৫ মে সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল টেকপাড়া এলাকার নিজ বাসায় অভিযান চালিয়ে ১ টি রিভলবার, ৮ রাউন্ড গুলি ও ৮ টি শর্টগানের কার্তুজ উদ্ধার করা হয়। পরে এই ঘটনায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের তৎকালিন এস আই মাসুদ খান বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছিল। আদালত সেই মামলায় ৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আসামীর উপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করেছেন। কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান বলেন, একটি অস্ত্র মামলায় নূর হোসেনের বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করেছে আদালত। রায় ঘোষণার আগে তাকে কড়া নিরাপত্তায় কাশিমপুর কারাগার থেকে নারায়ণগঞ্জ আদালতে আনা হয় সেই সাথে বিচারিক কার্যক্রম শেষে তাকে আবার কড়া নিরাপত্তায় কাশিমপুর কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।