আমরা যারা আপনজন হারিয়েছি তাদের মানবাধিকার কোথায় ছিল ? : প্রধানমন্ত্রী

219

মিরর বাংলাদেশ : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আজকে যেসব দেশ মানবাধিকারের প্রশ্ন তোলে, আমাদের ওপর স্যাংশন (নিষেধাজ্ঞা) দেয়, তারা তো খুনিদের আশ্রয় দিয়ে রেখেছে।
গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত সভায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভা সঞ্চালন করেন দলটির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ। এছাড়াও সভায় আরো বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু ও তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমন্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান ও কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস প্রমুখ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই খুনি রাশেদ। এই রাশেদ ছিল মিন্টু রোডে যে অপারেশন হয় সেই অপারেশনের কমান্ডিং অফিসার। আমেরিকার সঙ্গে আমরা বারবার কথা বলছি, কিন্তু তারা তাকে (রাশেদ) দিচ্ছে না। এদের কাছ থেকে আমাদের মানবতার সবক নিতে হয়। তারা আমাদেরকে মানবতার সবক শেখায় যারা আমার বাবা, মা, নারী, শিশু- তাদেরকে হত্যা করেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আজকে চারিদিকে অনেক প্রশ্ন, মানবাধিকারের প্রশ্ন আসে। মানবাধিকারের কথা বলা হয়, আমাদের সরকারকে মানবাধিকারের ব্যাপারে প্রশ্ন করে। যারা এই প্রশ্ন করে তাদের কাছে আমার জিজ্ঞাসা, আমাদের মানবাধিকার, ১৫ আগস্ট আমরা যারা আপনজন হারিয়েছি তাদের মানবাধিকার কোথায় ছিল? আমাদের তো বিচার চাওয়ার অধিকার ছিল না। আমি আমার বাবা-মা হারিয়েছি, কিন্তু আমি মামলা করতে পারব না।
তিনি বলেন, ৩২ নম্বর, ওই ধানমÐির। লাশগুলো তো পড়েছিল। কত ¯েøাগান, তুমি আছ যেখানে, আমরা সেখানে। কোথায় ছিল সেই মানুষগুলো? একটি মানুষ ছিল না সাহস করে এগিয়ে আসার? একটি মানুষ ছিল না প্রতিবাদ করার? কেন করতে পারিনি? এত বড় সংগঠন, এত সমর্থক, এত লোক- কেউ তো একটা কথা বলার সাহস পায়নি। ১৫ আগস্ট থেকে ১৬ আগস্ট সেই লাশ পড়েছিল। বিচারের বাণী তো নিভৃতে কাঁদে। আমি ফিরে এসেও তো বিচার করতে পারিনি। আমাদের তো মামলা করারও অধিকার ছিল না। কারণ ইনডেমনিটি দিয়ে তাদেরকে পুরস্কৃত করা হয়েছে।
আলোচনা সভায় ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সবাই শুধু ঐক্যবদ্ধ থাকুন। দলটাকে সুশৃঙ্খল রাখুন। যেভাবে এগিয়ে চলছে আমরা যদি নেত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী এগিয়ে যেতে পারি, আগামী নির্বাচনে আমরা আবারো বিজয়ের বন্দরে পৌঁছাতে পারব। আওয়ামী লীগে সব আছে। এখানে ভালো মানুষের অভাব নেই। শুধু ঐক্যটা রাখলেই হবে। ঐক্যটা থাকলে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হবে। আওয়ামী লীগের বিজয় কেউ ঠেকাতে পারবে না।’আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘অনেক তথ্য অজানা রয়ে গেছে। অনেকের ভূমিকা অজানা রয়ে গেছে। সত্যের খাতিরে ইতিহাসের এসব তথ্য উন্মোচন করা দরকার। আইনমন্ত্রী বলেছেন, কমিশন গঠন করবেন। শুধু মুখে নয়, আমি বলব বাস্তবে এর কার্যকারিতা বাংলার মানুষ দেখতে চায়। এ নৃশংস হত্যাকাÐের রহস্যময় আরো পুরুষ আছে। যাদের জাতি চেনে না। কিন্তু চেনা মুখ। সত্য জানা উচিত। সত্যের মুখোমুখি আমরা। সত্য আমাদের জানতে হবে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘জিয়াউর রহমান খুনিদের পুরস্কৃত করে থাইল্যান্ডে পাঠাল। তারপর তাদের চাকরি দিলো কয়েকটা দূতাবাসে। বাংলাদেশের দূতাবাস। এটাই শুধু পুরস্কার নয়, কয়েকজনকে প্রমোশন দিল। এটাই শুধু পুরস্কার নয়, খন্দকার মোশতাকের ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স হত্যাকারীদের বিচাররোধকারী। ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স জিয়াউর রহমান পঞ্চম সংশোধনীতে অন্তর্ভুক্ত করে বাংলাদেশের সংবিধানকে কলঙ্কিত করেছে। খুনিদের এই জিয়াউর রহমানই সাংবিধানিক বৈধতা দিতে চেয়েছিলেন।