* রাজধানীতে আওয়ামীলীগের বিক্ষোভ সমাবেশ
মিরর বাংলাদেশ : বিএনপি আবারও ধরা খাবে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সময় ঘনিয়ে আসছে। বিএনপি আবারও ধরা খাবে। খেলা হবে, রাজপথে হবে, আন্দোলনে হবে, নির্বাচনে হবে, মোকাবিলা হবে। প্রস্তুত হন, খেলা হবে।
বুধবার রাজধানীর রমনা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সামনে ১৭ আগস্ট দেশব্যাপী সিরিজ বোমা হামলার প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল-পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ বজলুর রহমান। সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, ড. আব্দুর রাজ্জাক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মির্জা আজম, এসএম কামাল হোসেনও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মান্নাফী প্রমুখ।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি বলে আওয়ামী লীগের পায়ের তলায় নাকি মাটি নেই। এই যে জনতার ঢল, শেখ কামালের মাজারে, বঙ্গমাতার মাজারে, বঙ্গবন্ধুর মাজারে এই ঢল বিএনপি কোনওদিন দেখেনি। কী নিয়ে খেলবেন? গতবার মতো জগাখিচুড়ি জোট নিয়ে ধরা খেয়েছেন মির্জা ফখরুল সাহেব। বিএনপি এবারও ধরা খাবে।
জাতিসংঘ মানবাধিকার প্রধানের কাছে বিএনপি নালিশ করেছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘জাতিসংঘ মানবাধিকার প্রধানের কাছে গুম খুন নিয়ে মিথ্যা নালিশ করেছে বিএনপি। এসব মিথ্যা বলে দেশের সুনাম নষ্ট করেছে তারা।’
‘বিএনপির নাম হলো নালিশ পার্টি। তাদের কাজ হলো বিদেশিদের কাছে নালিশ করে দেশের সুনাম ক্ষুণ্ণ করা। ক্ষমতায় যেতে চান সেই ক্ষমতার ময়ূরসিংহাসন কত দূর? বিদেশিদের কাছে নালিশ করে ক্ষমতায় যাওয়ার দিন শেষ হয়েছে বহু আগে।’
বিএনপি ধান ভানে আর শিবের গীত গায় মন্তব্য করে ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘যে মানবাধিকারের কাছে নালিশ করেছেন তাদের তো বিচার করার কোনো ক্ষমতা নেই। ফখরুল সাহেবরা রাজনীতি করেন, এসব বিষয়ে জানতে হবে, হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলছেন! আগুন সন্ত্রাস, আর বোমাবাজি করার দিন শেষ। এখন আর সুযোগ পাবেন না। কোন জায়গায় কি বলতে হয় তাও বুঝতে হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ কখনো পাকিস্তান হবে না, শ্রীলঙ্কা হবে না। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের রিজার্ভ এখন ৪২ মিলিয়ন ডলার। আপনারা (বিএনপি) ভাবছেন দেশ শ্রীলঙ্কা হবে, আর সেই সুযোগে ক্ষমতায় আসবেন! দেশের মানুষ তা হতে দেবে না।’
এই বিক্ষোভ মিছিল থেকে নেতাকর্মীদের শপথ নেওয়ার আহবান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বাংলাদেশে সন্ত্রাস জঙ্গিবাদের দল হলো বিএনপি। তারা সুযোগ পেলেই আবার আগুন সন্ত্রাস করবে। আগুন সন্ত্রাস জঙ্গিবাদের দলকে ক্ষমতায় আসতে দেওয়া হবে না। আগামী নির্বাচনে আগুন সন্ত্রাস জঙ্গিবাদকারীদের (বিএনপিকে) কোনো সুযোগ দেওয়া হবে না। তারা ক্ষমতায় এলে দেশকে আবারও জঙ্গিরাষ্ট্রে পরিণত করবে।
বিএনপি জঙ্গিদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ। এর ফলেই ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট সারাদেশে সিরিজ বোমলা হামলা হয় বলে জানান তিনি।
মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি বলেন, সারাদেশে একসঙ্গে ৬৩ জেলায় পাঁচশোর বেশি জায়গায় সিরিজ বোমা হামলা হয়েছে। এটা বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা ছিল না। বিএনপি জঙ্গিদের হাতে শত শত ট্রাক অস্ত্র তুলে দিয়েছিল। চট্টগ্রামে ১০ ট্রাক অস্ত্র আটক হয়েছিল। তারা বাংলাদেশকে জঙ্গিবাদের রাষ্ট্রে পরিণত করতে চেয়েছিল।
হানিফ বলেন, বিএনপি-জামায়াত দেশকে অন্ধকারে নিয়ে গিয়েছিল। ১৭ আগস্ট ছিল উগ্র ও জঙ্গিরাষ্ট্র গড়ার চূড়ান্ত মহড়া। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই অন্ধকার থেকে বাংলাদেশকে আলোর দিকে নিয়ে যাচ্ছেন।
আগামী নির্বাচন উপলক্ষে রাজপথে নিজেদের শক্তির জানান দিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। ১৭ আগস্ট সিরিজ বোমা হামলা দিবস উপলক্ষে রাজধানীসহ সারাদেশে সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মীর জমায়েত করেছে দলটি। পাশাপাশি দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যেও সে ইঙ্গিত মিলেছে।
রাজধানীতে ক্ষমতাসীনদের এই কর্মসূচি সফল করতে দুপুরে রাজধানীর বিভিন্ন ইউনিট ও আশপাশের এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে রমনায় আসতে শুরু করে নেতাকর্মীরা। সহযোগী সংগঠনগুলোর অংশগ্রহণও ছিল চোখে পড়ার মতো। যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ, শ্রমিক লীগ, তাঁতী লীগ, মৎসজীবী লীগ ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা ছাড়াও ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণের নেতাকর্মীরা কর্মসূচিতে মিছিল নিয়ে যোগ দেন।