জাতীয় গ্রিডের ফ্রিকোয়েন্সি নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি বলে বিদ্যুতের বিপর্যয়

248
  • ঘটনা অনুসন্ধানে কাজ শুরু করেছে তদন্ত কমিটি
  • ঘোড়াশাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে দুটি সাব-স্টেশনের মাঝখানে ইন্টারকানেকশনে মূলত সমস্যা
  •  উৎপাদন সক্ষমতা বাড়লেও সঞ্চালন ব্যবস্থার দুর্বলতা রয়েই গিয়েছে

মুহা: ইউসুফ আল আজিজ : বিদ্যুতের জাতীয় গ্রিডের ফ্রিকোয়েন্সি নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি বলে বিদ্যুতের জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয় হয়েছে। সরবরাহ ও চাহিদার মধ্যে সমন্বয় না হলে বিদ্যুতের বিপর্যয় হয়। তবে কোথায় এটা হয়েছে তা চিহ্নিত করতে মাঠে নেমেছে তদন্ত কমিটি । সদস্য কমিটির সদস্যরা গতকাল বুধবার ঘটনা অনুসন্ধানে নরসিংদীর ঘোড়াশাল পরিদর্শন করেছেন। সেখান থেকে তারা যায় আশুগঞ্জ। তদন্ত দল দেশের কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাওয়ার কন্টোলরুমগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে । সবগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর কী কারণে বিপর্যয় দেখা দেয় সেটি জানা যাবে। মঙ্গলবার দুপুর থেকে সারাদেশে বিদ্যুতের বিপর্যয় দেখা দেয়। দেশের অধিকাংশ এলাকায় প্রায় ৬/৭ ঘন্টা বিদ্যুৎ ছিল না । অনেক এলাকায় আরো বেশি সময় ধরে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল।
চট্টগ্রাম স্ক্যাডা পরিচালনা বিভাগের নির্বাহি প্রকৌশলি আব্দুল ফাত্তাহ মো: মোস্তাফিজুর রহমান জানান, সরবরাহ ও চাহিদার মধ্যে সমন্বয় না হলে বিদ্যুতের বিপর্যয় হয়। প্রত্যেক লাইনের সাথে প্রত্যেক লাইনের সংযোগ আছে। তাই চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে সমন্বয় না হলে সাথে সাথে বিদ্যুৎ বিপর্যয় হবে। এখানে ফ্রিকোয়েন্সি নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। তিনি বলেন, কোথায় এটা হয়েছে তা এখনও জানা যায়নি। বিদ্যুৎ উৎপাদনে এখন মনোযোগ দেয়া হচ্ছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন করতেও বিদ্যুৎ প্রয়োজন হয়। কাপ্তাই থেকে প্রথমে অন্যান্য বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ দিয়ে উৎপাদন শুরু করা হয়েছে।
জানা গেছে , জাতীয় গ্রিডের বিপর্যয় সামলে স্বাভাবিক হয়েছে দেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ। কিন্তু হঠাৎ করে এমন বিপর্যয় কেন? তার কারণ জানতে গঠন করা হয় তদন্ত কমিটি। সেই কমিটি গতকাল বুধবার কাজ শুরু করে
বিদ্যুৎ সচিব মো. হাবিবুর রহমান বলেন, আমাদের তদন্ত কমিটি বুধবার সকালে ঘোড়াশাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে গেছে। কমিটি প্রাথমিক ধারণা দিতে পারবে। তার আগে বলা যাচ্ছে না কী কারণে সমস্যা হয়েছিল।
বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের বিষয়ে সচিব বলেন, ঘোড়াশাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে দুটি সাব-স্টেশনের মাঝখানে যে ইন্টার কানেকশন রয়েছে, সেখানেই মূলত সমস্যা। কিন্তু সমস্যাটা কেন হলো সেটা এখনো জানা যায়নি। তা উদ্ঘাটনের জন্য আমাদের অভিজ্ঞ টিম সেখানে গেছে। সেটা জানতে পারবো তদন্ত কমিটি জানানোর পর তবে এখন সারাদেশে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।
এদিকে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেডের এক প্রকৌশলী জানান, এখনো কিছু বলা যাচ্ছে না। তদন্ত দল ঘুরে ঘুরে সব দেখছে। তারা প্রতিবেদন দেবেন। জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কারণ খুঁজতে নরসিংদীর ঘোড়াশাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিদর্শনে গেছেন পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) ছয় সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি।
বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পিজিসিবির নির্বাহী পরিচালক ইয়াকুব এলাহি চৌধুরীর নেতৃত্বে তদন্ত কমিটির সদস্যরা বিদ্যুৎকেন্দ্রের কন্টোলরুম পরিদর্শন করেন। দীর্ঘ তিন ঘণ্টা বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিভিন্ন মেশিনারি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বিকেল সাড়ে ৩টায় সেখান থেকে আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশনে রওয়ানা দেন তারা।
এসময় তদন্ত কমিটির প্রধান পিজিসিবির নির্বাহী পরিচালক ইয়াকুব এলাহি চৌধুরী জানান, জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ে দেশের কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাওয়ার কন্টোলরুমগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। সবগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর কী কারণে বিপর্যয় দেখা দেয় সেটি জানা যাবে। ঘোড়াশাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে পরিদর্শনে পিজিসিবির নির্বাহী পরিচালকের সঙ্গে পিজিসিবির পরামর্শক শামছুর জোহা, নির্বাহী প্রকৌশলী আরেফিন সিদ্দিক ও সাইদুল ইসলামসহ তদন্ত কমিটির ছয় সদস্য উপস্থিত ছিলেন। এদিকে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কারণে ঘোড়াশালে ৫ নম্বর ইউনিটে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। ইউনিটটি চালু করতে কাজ চলছে বলে জানান প্রধান প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম।
এর আগে মঙ্গলবার দুপুর ২টার পর জাতীয় গ্রিডের পূর্বাঞ্চলে বিদ্যুৎ বিপর্যয় দেখা দেয়। এতে একযোগে রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও সিলেট অঞ্চলে বন্ধ হয়ে যায় বিদ্যুৎ সরবরাহ। এরপর রাতে পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন অঞ্চলে বিদ্যুৎ স্বাভাবিক হতে শুরু করে।
একসময় পাকিস্তানের বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ছিল চাহিদার তুলনায় অনেক কম। দীর্ঘদিন এ বিষয়টিকেই দেশটির বিদ্যুৎ খাতের প্রধান সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন নীতিনির্ধারকরা। এ সমস্যা সমাধানের জন্য দেশী-বিদেশী উদ্যোক্তাসহ দাতা সংস্থাগুলোর কাছে রীতিমতো ধরনা দিয়েছেন তারা। নানা সুযোগ-সুবিধা দিয়ে বিদ্যুৎ খাতের বেসরকারি (আইপিপি) ও বিদেশী উদ্যোক্তাদের উৎসাহ দেয়া হয়েছে নতুন নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে। বিষয়টি আরো গতি পায় বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (বি আরআই) আওতায় চীন-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডোরের (সিপিইসি) অধীনে একের পর এক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা শুরু হলে। একসময় দেখা যায় পাকিস্তানের বিদ্যুৎ খাতের উৎপাদন সক্ষমতা দাঁড়িয়েছে দেশটির চাহিদার দেড় গুণেরও বেশিতে।
সে তুলনায় দেশটির বিদ্যুৎ সঞ্চালন খাতে তেমন কোনো বিনিয়োগই হয়নি। বিতরণ ব্যবস্থা থেকে গিয়েছে জীর্ণশীর্ণ। জাতীয় গ্রিডের অনির্ভরযোগ্য সঞ্চালন ব্যবস্থার পাশাপাশি জ্বালানিতে আমদানিনির্ভরতার কারণে পাকিস্তানের বিদ্যুৎ খাত দিনে দিনে আর্থিকভাবে নাজুক অবস্থানে চলে গিয়েছে। সঞ্চালন ব্যবস্থার দুর্বলতা ও জ্বালানির অভাবে অধিকাংশ বিদ্যুৎকেন্দ্রকেই অলস বসিয়ে রাখতে হয়েছে। যদিও চুক্তি অনুযায়ী অলস বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে ডলারে নির্ধারিত মূল্যে ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধ করতে হয়েছে পাকিস্তান সরকারকে। বিদ্যুৎ খাতের অনুৎপাদনশীল এ বিপুল পরিমাণ ব্যয় পরিশোধ করতে করতে একসময় এ অতিরিক্ত উৎপাদন সক্ষমতাই দেশটির জাতীয় অর্থনীতির সবচেয়ে বড় বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিদ্যুৎ খাতে সার্কুলার ডেবট বা ক্রমপুঞ্জীভূত দেনার দায় বাড়তে বাড়তে একপর্যায়ে প্রায় দেউলিয়াত্বের দিকে চলে যায় পাকিস্তান। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বেইলআউট সুবিধায় ভর করে মহাবিপর্যয় এড়াতে সক্ষম হলেও এখনো দেশটির দায়দেনা পরিস্থিতি বিপজ্জনক পর্যায়েই রয়ে গিয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
একসময় বাংলাদেশেও সক্ষমতার ঘাটতিকে বিদ্যুৎ খাতের বড় সমস্যা হিসেবে দেখা হয়েছে। সরকারি সুযোগ-সুবিধায় নির্মাণ করা হয়েছে একের পর এক আইপিপি। স্থানীয় ও বিদেশী উৎস থেকে ঋণ নিয়ে একের পর এক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। যদিও সে অনুযায়ী বিদ্যুতের ব্যবহার বাড়ানো যায়নি। অবহেলিত থেকে গিয়েছে সঞ্চালন ব্যবস্থায় বিনিয়োগও। এ নিয়ে গৃহীত প্রকল্পগুলোর অগ্রগতিও এখন পর্যন্ত খুব একটা সন্তোষজনক নয়। সর্বশেষ মঙ্গলবার দুপুরে দেশব্যাপী জাতীয় গ্রিডের বিপর্যয় এ সংকটকেই আবারো সামনে তুলে এনেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
তাদের ভাষ্যমতে, জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়ের প্রধান কারণ হতে পারে দুটি। প্রথমত, বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর উৎপাদনের সঙ্গে সঞ্চালন ব্যবস্থা সামঞ্জস্যপূর্ণ না হলে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থায় বিপর্যয় নেমে আসতে পারে। দ্বিতীয় কারণ হতে পারে অব্যবস্থাপনা। বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতের বর্তমান প্রেক্ষাপট বিবেচনায় এ দুটি বিষয়ের যেকোনোটি গতকালের বড় এ বিভ্রাটের পেছনে প্রধান প্রভাবকের ভূমিকা রাখতে পারে।
এর আগে ২০১৪ সালের ১ নভেম্বর জাতীয় গ্রিডে এমন বিপর্যয় দেখা দিয়েছিল। ওই সময় ভেড়ামারায় ভারত ও বাংলাদেশের সঞ্চালন লাইনের সংযোগস্থলের ত্রুটি থেকে এ বিপর্যয়ের সূত্রপাত ঘটেছিল।
পাওয়ার সেলের তথ্য অনুযায়ী, ক্যাপটিভ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ দেশে এখন বিদ্যুতের উৎপাদন সক্ষমতা প্রায় পৌনে ২৬ হাজার মেগাওয়াট। যদিও এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ উৎপাদন হয়েছে চলতি ২০২২ পঞ্জিকাবর্ষের ১৬ এপ্রিল। ওই দিন দেশে মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে প্রায় ১৪ হাজার ৭৮২ মেগাওয়াট।
উৎপাদন সক্ষমতা সর্বোচ্চে পৌঁছলেও এখনো সঞ্চালন ব্যবস্থার দুর্বলতা রয়েই গিয়েছে। যদিও গত এক দশকে এ দুর্বলতা কাটাতে অর্ধশতাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে পিজিসিবি। যদিও সংস্থাটির প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হচ্ছে অত্যন্ত ধীরগতিতে। পিজিসিবি-সংশ্লিষ্টরাও বিভিন্ন সময়ে দেশের সঞ্চালন ব্যবস্থার দুর্বলতার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। বিভিন্ন সময়ে এ দুর্বলতার জন্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ, গ্রামেগঞ্জে ছড়ানো-ছিটানো লাইন, সিস্টেম দুর্বলতা, পুরনো প্রযুক্তিসহ নানা বিষয়কে দায়ী করেছেন তারা।
এর সঙ্গে সঙ্গে দেশের বিদ্যুৎ খাতের জন্য এখন বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে আন্তর্জাতিক জ্বালানি বাজারের মূল্য পরিস্থিতি। দেশে বিদ্যুৎ খাতের নির্মাণাধীন বড় প্রকল্পগুলোর মধ্যে রূপপুর বাদে বাকি সবই কয়লাভিত্তিক। এগুলোয় জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার্য কয়লার সংস্থান করা হচ্ছে আমদানির মাধ্যমে। সম্ভাব্য উৎস ধরা হচ্ছে ইন্দোনেশিয়া, অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকাকে। ইউরোপীয় দেশগুলোও এখন এ তিন দেশ থেকে কয়লা আমদানি বাড়িয়েছে। বাজারে আগ্রহী ক্রেতার সংখ্যা বেশি হয়ে যাওয়ায় দেশ তিনটি থেকে সরবরাহকৃত কয়লার দামও এখন অনেক বেশি।
সঞ্চালন ব্যবস্থায় দুর্বলতা থেকে গেলেও বিদেশী ঋণে বিদ্যুৎ খাতের মনোযোগ এখনো একের পর এক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনেই নিবদ্ধ। দেশে বিদ্যুৎ খাতের ইতিহাসে সবচেয়ে ব্যয়বহুল প্রকল্প রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প।
সংশ্লিষ্টদের আশঙ্কা সঞ্চালন ব্যবস্থার ঘাটতিতে উৎপাদন সক্ষমতা সময়মতো কাজে লাগাতে না পারার বড় উদাহরণ হতে যাচ্ছে প্রকল্পটি। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ১ লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা। ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট সক্ষমতার এ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে সিংহভাগ অর্থায়ন করেছে রাশিয়া। প্রকল্পে দেশটির দেয়া ঋণের পরিমাণ ৯১ হাজার ৪০ কোটি টাকা। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী বছরের শেষ নাগাদ প্রকল্পটির প্রথম ইউনিট উৎপাদনক্ষম হয়ে ওঠার কথা রয়েছে।
কিন্তু সাত প্যাকেজের আওতায় বাস্তবায়নাধীন বিদ্যুৎকেন্দ্রটির সঞ্চালন লাইন নির্মাণের কাজে এখন পর্যন্ত সার্বিক অগ্রগতি ৪০-৪৫ শতাংশ। এর মধ্যে যমুনা ও পদ্মা নদীর এপার-ওপার সঞ্চালন লাইন নির্মাণে গৃহীত প্যাকেজটির অগ্রগতি হয়েছে মাত্র ২ শতাংশ। কাজ এগিয়ে নিতে এরই মধ্যে প্যাকেজটিকে ভারতীয় লাইন অব ক্রেডিটের আওতায় বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত থেকে বেরিয়ে এসেছে পিজিসিবি। এ কাজ কবে নাগাদ শেষ হবে সে বিষয়ে এখন পর্যন্ত নিশ্চিত করে কোনো তথ্য দিতে পারছে না কেউই। প্রকল্পের ঋণ পরিশোধ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে ২০২৭ সাল নাগাদ। সঞ্চালন ব্যবস্থার উন্নয়ন না করে বা সার্বিকভাবে বিদ্যুৎ খাতের অব্যবস্থাপনাগুলো নিয়ন্ত্রণে আনার আগেই কেন্দ্রগুলো উৎপাদনে এলে তা সার্বিকভাবে গোটা খাতকেই আর্থিকভাবে আরো নাজুক অবস্থানে ঠেলে দিতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ম তামিম বলেন, বিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগ হলো বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ, সঞ্চালন ও বিতরণ অবকাঠামোর আধুনিকায়ন। আমাদের বিদ্যুৎ খাতে বেশি গুরুত্ব পায় বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ। সঞ্চালন ও বিতরণ অবকাঠামোয় বিনিয়োগ, নির্মাণ অগ্রগতিতে বরাবরই ধীরগতি দেখা গিয়েছে। যে কারণে বিদ্যুতের উৎপাদন সক্ষমতা বাড়ানো গেলেও সঞ্চালন অবকাঠামোর অভাবে তা পরিপূর্ণভাবে পরিচালন করা যায়নি। এর আর্থিক ক্ষতিও এখন আমরা দেখছি।