নারায়ণগঞ্জে সম্মেলনকে ঘিরে জনসমাগমের চমক দেখাতে চায় আওয়ামীলীগ

210

*  দেখবেন লোক, নারায়ণগঞ্জে আসেন : ওবায়দুল কাদের

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি :
দীর্ঘ ২ যুগের বেশী সময় পরে আজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন। ইতোমধ্যে সম্মেলনের সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ করছে দলটি। তবে এবারের সম্মেলনের মাধ্যমে কারা নতুন নেতৃত্বে আসছে তার চাইতে বেশি আগ্রহ আজকের সমাবেশ লোক সমাগম নিয়ে। সম্মেলনের মাধ্যমে বিপুল সংখ্যক লোকের সমাগম ঘটিয়ে আওয়ামীলীগ বড় ধরনের চমক দিতে চায়। বেশি সংখ্যক লোক সম্মেলনে নিয়ে আসার জন্য ইতোমধ্যে দলের তৃণমূল পর্যায়ে বার্তা দেয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, বিএনপির বিভাগীয় জনসমাবেশে প্রবল বাধার মুখে বিপুল জনসমাগমকে পাল্টা জবাব দিতে নারায়ণগঞ্জের আওয়ামলীগের সম্মেলনকে বেছে নিয়েছে আওয়ামীলীগ। সর্বশেষ শনিবার খুলনায় বিএনপির সমাবেশে বিপুল সংখ্যক মানুষের সমাগমকে চ্যালেঞ্জ করতে নারায়ণগঞ্জের সম্মেলনে বিপুল মানুষের উপস্থিত চায় আওয়ামীলীগ।
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ওবায়দুল কাদের শুক্রবার এক সভায় বলেছেন, বড় বড় কথা বলেন, দেখবেন লোক, ২৩ তারিখে নারায়ণগঞ্জে আসেন।
এদিকে নারায়ণগঞ্জের আজকের সম্মেলনে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত করার জন্য জেলা ৭ থানা এলাকায় তৃনমূলে বার্তা দিয়েছে স্থানীয় সংসদ সদস্যরা। রুপগঞ্জ থেকে পাট ও বস্ত্র মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, আড়াইহাজার থেকে নজরুল ইসলাম বাবু সোনারগাও থেকে কায়সার হাসনাত নারায়ণগঞ্জ সদর আসন থেকে শামীম ওসমানের নির্দেশনায় বিপুল সংখ্যক মানুষ সম্মেলনে নিয়ে আসার চেষ্টা চলছে। এছাড়া মেয়র আইভীর নেতৃত্বে শহরের নেতাকর্মীরা সম্মেলনে আসার কথা রয়েছে।
সম্মেলন নিয়ে শামীম ওসমান এমপি বলেন, সুশৃঙ্খলভাবে সম্মেলন করতে হবে। আমাদের পার্টির সেক্রেটারী সহ কেন্দ্রীয় নেতারা আসবেন। দেখিয়ে দিতে হবে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের জন্য কতটা শক্তিশালী। আমি কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনে বলবো ত্যাগী পরীক্ষিত এমন নেতাদের মূল্যায়ন করুন যাতে কমিটির সর্বশেষ লোকটা ডাক দিলেও যেন এলাকা থেকে এক হাজার লোক বেরিয়ে আসে। জনগণের শক্তিতে আওয়ামী লীগ চলবে। তাই নেতাদের বলবো কর্মী বানান। কর্মীবান্ধব হন। আর যদি ত্যাগীদের মূল্যায়ন করা না হয় তাহলে আমরা শেখ হাসিনার কর্মী বাহিনী গঠন করবো।
তিনি বলেন, হাইব্রিডদের ধাক্কায় ত্যাগীরা কোনঠাসা। যখন কেউ দেখে ত্যাগীরা মূল্যায়িত হয় তখন অন্যান্য ত্যাগীরা খুশি হয়। অক্টোবর থেকে পরবর্তী নির্বাচন পর্যন্ত কোন কোন্দল নয়, একতাবদ্ধ থাকেন। অন্তত মে পর্যন্ত। কারো উপর আঘাত হলে যেন সবাই জেগে উঠি। নেত্রকোনায় কিছু হলে যেন নারায়ণগঞ্জ জেগে উঠে। দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে খারাপ সময় আসছে।
এদিকে সম্মেলনের এই আয়োজনের অংশ হিসেবে দলীয় প্রতীক নৌকার আদলে মঞ্চ তৈরি হয়েছে। ওসমানী পৌর স্টেডিয়ামে ইতোমধ্যে মঞ্চে বানানোর কাজ শেষ । মাঠের আয়োতনের তুলনায় লোক সংখ্যা কয়েক গুন বেশি হবে বলে আশা প্রকাশ করছে নেতাকর্মীরা।
শহরের ইসদাইর এলাকার ওসমান পৌর স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিতব্য এই সম্মেলন উদ্বোধন করবেন কৃষি মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মীর্জা আযম এমপি।
সম্মেলন ছাড়াই ২০১৬ সালের ৯ অক্টোবর আবদুল হাইকে সভাপতি, সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীকে সহ-সভাপতি এবং আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদলকে সাধারণ সম্পাদক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট জেলা আওয়ামী লীগের আংশিক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্র। এর ১৩ মাস পর নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের ৭৪ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই বলেন, এবারের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের প্রস্তুতি আগের সম্মেলনগুলোর চেয়ে অনেক ভালো। সাংগঠনিকভাবেও আমরা আগের চেয়ে ভালো অবস্থায় আছি। আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা যাকেই সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক বানাবেন, তাদের নেতৃত্বেই আমরা কাজ করবো।