জামায়াত নিষিদ্ধের বিষয়টি আদালতে, সরকার হস্তক্ষেপ করতে পারে না : ওবায়দুল কাদের

237
ছবি : ওবায়দুল কাদের

মিরর বাংলাদেশ : জামায়াতে ইসলামী নিষিদ্ধ করার প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিষয়টি উচ্চ আদালতে আছে। চূড়ান্ত রায় আসেনি। সরকার সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে পারে না। দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করার দাবি আছে। দলটির নিবন্ধন বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন।

সেতুমন্ত্রী বুধবার সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে রোড সেফটি প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।

এ সময় জাতিসংঘে মানবাধিকার কমিশনের চিঠি সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী প্রশ্ন রেখে বলেন, আমরা কি জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের কথা ও প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী চলি?

এর আগে রোড সেফটি অনুষ্ঠানের বক্তব্যে সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাংক ইচ্ছা করলে পদ্মাসেতুর কাজটি হাতে নিতে পারত। এখানে একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। একটা ষড়যন্ত্র ছিল। এর সঙ্গে বাঘা বাঘা কিছু ব্যক্তি জড়িত ছিল।

সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে নিজের অস্বস্তির কথা জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, এত উন্নয়নের পরও সড়ক দুর্ঘটনা এড়াতে পারছি না- এটা আজকে প্রশ্ন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘খালেদা জিয়ার জেল ও তত্ত¡াবধায়ক সরকার- এ দু’টো আওয়ামী লীগ করেনি। বেগম জিয়াকে মুক্ত করতে তারা একটি ভালো আন্দোলনও করতে পারেনি। এই ব্যর্থতার দায় নিয়ে বিএনপি নেতাদের টপ টু বটম পদত্যাগ করা উচিত।

তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়ার বিষয়টি অভ্যন্তরীণ। এই অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে বাইরের হস্তক্ষেপ যুক্তিসঙ্গত নয়। তার স্বাস্থ্যের চেয়ে তাকে নিয়ে রাজনীতি করাটাই মুখ্য। রাজনৈতিকভাবে এমন কোনো চাপ সৃষ্টি করতে পারেনি যে তাকে মুক্তি দিতে হবে। তার মুক্তির বিষয়টি আইনমন্ত্রী বলতে পারবেন।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগ হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রেসক্রিপশনে চলে না। কোনো চাপের কাছে নতি স্বীকার করে না, করবেও না। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, যাবে।’
প্রত্যেককে নিজের চেহারা আয়নায় দেখার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে গণতন্ত্রের নামে যা হয়েছে তা আমরা দেখেছি। ট্রাম্প আজ পর্যন্ত পরাজয় স্বীকার করেননি। গণতন্ত্রের ত্রæটি আছে, প্রাতিষ্ঠানিক রূপ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। আমাদের গণতন্ত্রও ত্রæটিমুক্ত নয়।’
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির আমলে আজিজ মার্কা নির্বাচন কমিশন আমরা দেখেছি। এগুলো দেশের মানুষের মনে আছে।’ তিনি বলেন, ‘গাজীপুর ও বরিশাল খুলনা সিটি নির্বাচন হয়েছে। এ ধরনের নির্বাচন হলে কি কারও সন্তুষ্ট হওয়ার কথা। জনপ্রিয়তা প্রমাণে নির্বাচনে আসতে হবে।’
এসময় জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এ বিষয়টি উচ্চ আদালতে বিচারাধীন। কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। জামায়াত তো নিবন্ধিত দল নয়, তারা নির্বাচন কিভাবে করবে?’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘পদ্মা সেতু করার অর্থ দিয়ে বিশ্বব্যাংক ইচ্ছে করলে সম্পৃক্ত থাকতে পারত। কিছু দুর্নীতির অভিযোগ এনে তারা সরে গিয়েছিল। এখানে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। তবে এজন্য শুধু বিশ্বব্যাংককে দায়ী করা যাবে না। দুর্নীতির অভিযোগ এনে বিশ্বব্যাংক সরে যাওয়ার পিছনে আমাদের দেশের কিছু বাঘা বাঘা ব্যক্তিও জড়িত ছিল।’
মন্ত্রী বলেন, ‘এই মেগা প্রকল্প করাসহ এতো উন্নয়ন করার পরও স্বস্তি পাচ্ছিলাম না শুধু দুর্ঘটনার কারণে।’
প্রকল্প বাস্তবায়নে সমস্যার কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘প্রকল্প বাস্তবায়ন করার ক্ষেত্রে নানা সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। এতে কষ্ট বাড়ে, সময়ও বাড়ে। এসময় বাংলাদেশ রোড সেফটি প্রজেক্টের অংশীদার হওয়ায় বিশ্বব্যাংককে ধন্যবাদ জানান তিনি।
বিশ্বব্যাংক বাজেটে সহযোগিতা করায় তাদেরকে ধন্যবাদ জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিশ্বব্যাংক যে সম্মান দেখিয়েছে এবং বাজেটে যে সহযোগিতা করেছে, তার জন্য বিশ্বব্যাংককে ধন্যবাদ জানাই।’
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী দেশে সড়ক দুর্ঘটনা কমিয়ে আনার জন্য কাজ করছেন জানিয়ে এজন্য সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান। বলেন, ‘আমরা যতই উন্নয়ন করি, পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেস, একদিনে একশ সেতু উদ্বোধন করি, তারপরও যখন দুর্ঘটনায় খবর দেখি তখন মনটা বিষণ্ণ হয়ে যায়। এটা খুব কষ্টের। আমরা মন্ত্রী হলেও তো মানুষ। এ দুর্ঘটনা আমাদের মনে কষ্ট দেয়।’ তিনি বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনায় দেশে ৩৫ হাজার কোটি টাকার বার্ষিক ক্ষতি হয়। আমাদের ভাবনার চেয়ে বাস্তবায়ন খুবই ধীর গতি