পদযাত্রা বিজয় নয় পতনযাত্রা

244

* রাজধানীতে আওয়ামী লীগের ‘শান্তি ও উন্নয়ন শোভাযাত্রা

*  যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউ বিএনপিকে ঘোড়ার ডিম দিয়েছে

মিরর বাংলাদেশ  : বিএনপির পদযাত্রাকে তারা ‘বিজয়যাত্রা শুরু’ দাবি করলেও তাকে ‘পতনযাত্রা’ বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘তিনি কী বলেছেন? পদযাত্রা,জনযাত্রা, বিজয়যাত্রা। আসলে পদযাত্রা পরাজয়যাত্রা। পদযাত্রা পতন যাত্রা শুরু হয়ে গেছে।’
মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের ‘শান্তি ও উন্নয়ন শোভাযাত্রা’ পূর্ব সমাবেশে এসব কথা বলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। আওয়ামী লীগের শান্তি ও উন্নয়ন শোভাযাত্রা শুরু হয়েছে বিকাল ৩টায় । মৎস্য ভবন থেকে শুরু হয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে গিয়ে শেষ হয় আওয়ামলীগের কর্মসূচি।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, এস এম কামাল হোসেন, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ‘ইউরোপীয় ইউনিয়ন কী দিয়েছে? তত্ত¡াবধায়ক সরকার, শেখ হাসিনার পদত্যাগ, সরকারের পদত্যাগ দিয়েছে? তাদের কাছে দাবি করে কে, বিএনপি। কী পেয়েছে? একটা হাসের ডিম, ঘোড়ার ডিম।’
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমেরিকানরা আসছে, মনে করছে তারা তত্ত¡াবধায়ক দেবে, সংগ্রাম করতে হবে। তারা এলো, চলে গেলো। বিএনপিকে দিয়ে গেলো ঘোড়ার ডিম।’
তিনি বলেন, ‘তত্ত¡াবধায়ক হবে না। পার্লামেন্টের বিলুপ্তি হবে না। শেখ হাসিনার পদত্যাগ করার প্রশ্নই ওঠে না।’
শেখ হাসিনা নির্বাচনকালীন সরকারের দায়িত্ব পালন করবেন জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপির কথায় প্রধানমন্ত্রী সরে যাবেন? যতই ষড়ষন্ত্র করেন, বিষোদগার করেন কোনও লাভ হবে না। আমরা প্রতিটা নির্বাচনে শান্তি চাই।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি মনে করছে ২০০১ সাল আর ২০০৬ সালÍ এই দুই সময়ের মতো তাদের তত্ত¡াবধায়ক সরকার নিয়ে আসবে। ওই সরকার নিয়ে এসে তারা জিতে যাবে। তাদের এই আশায় গুড়ে বালি। তারা যা চেয়েছে কোনও দিনও হবে না। তত্ত¡াবধায়ক আদালত মেরে ফেলেছে। বাতিল করেছে উচ্চ আদালত। ওরা তো আদালত মানে না। আইন মানে না।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এ দেশের মাটি মানুষের পার্টি। বঙ্গবন্ধুর পার্টি, শেখ হাসিনার পার্টি। এই পার্টি কারও কাছে মাথা নত করে না। বাংলাদেশে যত শয়তানের দল আছে, বাংলাদেশের সব শয়তাতের জায়গা হচ্ছে বিএনপি।’
বিএনপির উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘কী মেরামত করেছেন, খাম্বা?’দ্রব্যমূল্য আস্তে আস্তে কমার আশ্বাস দিয়ে এবং সরকারের গত তিন মেয়াদের উন্নয়ন কর্মকাÐ তুলে ধরেন তিনি বলেন, ‘বিএনপি ঘোড়ার ডিম ছাড়া কিছুই দিতে পারবে না। ফখরুল, পাবলিকরে কী দিয়েছেন?’
আগামী মাসে আরও কিছু উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন হবে বলে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ফখরুল বুঝে গেছে, গতবারের মতো এবারও হারবে। এই দল ভুয়া। এদের সব কথা ভুয়া। ওদের আন্দোলন ভুয়া।’
তিনি বলেন, ‘২০৩০ সালের মধ্যে বিএনপি নাকি ডিজিটাল করবে। তাদের সে স্বপ্ন ডিপ ফ্রিজে। এখন আর বলে না। তাদের ৩০ সালের স্বপ্ন ভুয়া।’
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমি সবাইকে বলছি, আমাদের ধৈর্য ধরার সময়। আমরা বিজয়ী হবো। পরিবেশ যেন অশান্ত না হয়।’ কারও উসকানিতে কান না দিয়ে নিজেদের কর্মসূচি পালনের নির্দেশ দেন তিনি।
এ সময় বিএনপিকে ‘খালি কলসি’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘ভরা কসলি নড়ে না। বিএনপি খালি কলসি। হারা পার্টি বিশৃঙ্খলা করতে চায়। আমরা জেতা পার্টি।’
বিএনপি গণতন্ত্রকে সাইনবোর্ড হিসেবে ব্যবহার করে’ উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপির এই ধরনের তথাকথিত রূপরেখা ও আন্দোলনের হুমকি বাংলাদেশের চলমান উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে পারবে না। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধভাবে এই অপশক্তির ষড়যন্ত্র প্রতিহত করবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি আজ যেসব রূপরেখা ও দফা তুলে ধরছে, প্রকৃতপক্ষে তারা তা বিশ্বাস ও ধারণ করে না। কারণ, তারা ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় এসব নীতির বিরুদ্ধে সব ধরনের ধ্বংসাত্মক কর্মকাÐ চালিয়ে ছিলÍগণতন্ত্রকে সাইনবোর্ড হিসেবে ব্যবহার করে।’
তিনি বলেন, ‘‘তারা দুর্নীতির বরপুত্র, একুশে আগস্টের নারকীয় গ্রেনেড হামলার মাস্টারমাইন্ড, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক তারেক রহমানের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের মাধ্যমে বিএনপি জনগণকে সেই ‘হাওয়া ভবন’-এর দুঃশাসনের যুগে ফিরিয়ে নিতে চায়। আজ তারা দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশের কথা বলছে। অথচ বিএনপির শাসনামলে টানা পাঁচবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়নের কলঙ্কের কথা জনগণ ভুলে যায়নি।
মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া সমাবেশে বলেন, বিএনপি একটি সন্ত্রাসী দল। এ সন্ত্রাসী দল আজকে সকালে আমাদের মিরপুরে ছাত্রলীগের কর্মীদের ওপর হামলা করেছে। মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দিয়েছে। ইতোমধ্যে সন্ত্রাসী কর্মকাÐ শুরু করেছে। আমরা রাজপথে মোকাবিলা করব।
বিএনপিকে হুঁশিয়ার করে তিনি বলেন, যদি অবাধ নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করেন, আওয়ামী লীগের কর্মীদের ওপর হামলা করার চেষ্টা করেন তাহলে আপনাদের পরিণাম হবে ভয়াবহ।
কামরুল ইসলাম বলেন, আমরা উন্নয়নের ধারাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। পদযাত্রার নামে মিরপুরে যেভাবে ছাত্রদের ওপর হামলা করেছে, তারা বাংলাদেশকে আবার সন্ত্রাসের অভয়ারণ্যে পরিণত করতে চায়। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে। তাই, সন্ত্রাসের পথে না হেঁটে নির্বাচনের পথে হাঁটুন। অন্যথায় আপনাদের অস্তিত্ব থাকবে না।
ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন বলেন, বিএনপি জামায়াত যে নৈরাজ্যের জন্ম দিতে চায় তাদের দাঁত ভাঙা জবাব দিতে হবে। যদি তারা আবার সন্ত্রাসী কর্মকাÐ করে তাহলে আমরা কিন্তু বসে থাকব না। আমরা দাঁত ভাঙা জবাব দেব। জবাব দিতে গিয়ে যদি কোনো ঘটনা ঘটে তার দায় বিএনপি-জামায়াতকে নিতে হবে। আমাদের আন্দোলন সংগ্রাম শুরু হলো। আগামী নির্বাচন পর্যন্ত যত কর্মসূচি থাকবে আমরা পালন করব।
আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম বলেন, বিএনপি জামায়াতের অপরাজনীতি বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থ বিরোধী। ধর্মকে ব্যবহার করে তারা ফায়দা লুটতে চায়, উন্নয়নে আঘাত হানতে চায়, ব্যাহত করতে চায় গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা। গণতন্ত্রকে ওরা হত্যা করতে চায়। বাংলাদেশের মানুষ জেগে উঠেছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় এগিয়ে চলছে।
মির্জা আজম বলেন, বিএনপি ২০১৪-১৫-১৮ সালে অগ্নিসন্ত্রাস করে দেশে অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করেছিল। বিএনপি আবারও তার পুরনো চরিত্রে ফিরে এসেছে। এজন্য আমাদের শান্তি সমাবেশ করতে হচ্ছে