নারী নির্যাতন-ধর্ষণের প্রতিবাদে সাংবাদিক সমাজের মানববন্ধন

768

বিশেষ প্রতিনিধি: নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ, সিলেটের এম সি কলেজসহ সারাদেশে নারীর শ্লীলতাহানি, নির্যাতন ও ধর্ষনের ঘটনার প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে দেশ। তীব্র আন্দোলনের আওয়াজ ছড়িয়েছে সারাদেশে। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে রোববার নারী নির্যাতন-ধর্ষণের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ। ধর্ষকদের বিচারের দাবিতে মানব বন্ধ করেছে সাংবাদিক সমাজও।

আজ সোমবার ৫ অক্টোবর রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানব বন্ধন করেন রাজধানীতে কর্মরত বিভিন্ন গণমাধ্যমের সংবাদকর্মীরা। প্লেসক্লাব চত্বরে নানা স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে তারা এ মানববন্ধন পালন করেন। এসময় দৈনিক সময়ের আলোর নির্বাহী সম্পাদক ও ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য শাহনেওয়াজ দুলাল বলেন, সারাদেশে নারীদের ওপর যেভাবে নির্যাতন-অত্যাচার ও ধর্ষণ বেড়েছে তার প্রতিবাদে আমরা বাধ্য হয়েছি প্রতিবাদ কর্মসূচিতে নামতে। আমাদের কাজ মানুষের খবর লেখা কিন্তু পরিস্থিতি এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে যে এই জগণ্য অপরাধের প্রতিবাদ না করলেই নয়। গত এক মাস আগে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে একটি বর্বর-নৃশংস ঘটনা ঘটেছে। যা আমরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানতে পারলাম। তাহলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কি কাজ? ওই অঞ্চলের প্রশাসন কি করছিলো? আমরা এসব প্রশ্নের জবাব চাই। চাই সব অভিযুক্তদের শাস্তি।
একই কথা বলেন ঢাকা ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সহ-সভাপতি ও সিনিয়র সাংবাদিক নজরুল কবির বলেন, আজ আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। তাই আমরা এর প্রতিবাদে মাঠে নামতে বাধ্য হয়েছি। আমাদের মা-বোনেরা আজ নিজেদের ইজ্জত রক্ষা করতে ঘরবন্দি হড়ে পড়েছেন। মুক্তভাবে তারা চলাফেরা করার স্বাধীনতা হারিয়ে ফেলছেন। নারী নির্যাতনকারীরা অপরাধ করেও ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থাকছে। অনেককে আবার আইনের আওতায় আনা হলেও নানাভাবে তারা ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে। এ কারণে দেশে নারী নির্যাতন বেড়ে চলছে।
একুশে টেলিভিশনের সিনিয়র সাংবাদিক মুশফিকা নাজনীন বলেন, সারাদেশ আজ স্তম্ভিত। এ কেমন বর্ববরতা। জল্লাদের উল্লাস আমাদের বাংলায় এ দল না ওই দল সে প্রশ্নে বা তর্কে না যেয়ে এবার নিজেরা নিজেদের দোষ খুঁজতে হবে। সচেতনতা তৈরি করতে হবে নিজের ঘর থেকেই। তিনি বলেন, নির্যাতনের ভয়ে নারী ঘরবন্দি হলে দেশের সকল খাতে উন্নয়ন বাধাগ্রস্থ হবে। তাই নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নির্যাতন ও ধর্ষণকারীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
দৈনিক যুগান্তরের সিনিয়র সাংবাদিক শেখ মামুন বলেন, দেশের প্রতিটি স্থরে নারীরা নির্যাতিত হচ্ছে। আর এভাবে চলতে দেয়া যায় না। আমরা এর কঠিন বিচার চাই।
এ সময় দৈনিক আমাদের নতুন সময় পত্রিকার সিনিয়র সাংবাদিক জান্নাতুল ফেরদৌস পান্না বলেন, আমরা সাংবাদিকরা সংবাদ লিখার মাধ্যমে সব সময় প্রতিবাদ জানাই। কিন্তু আজ আমরা ঘর থেকে বেরিয়ে এসেছি। প্রতিবাদ করতে রাস্তায় নেমেছি। আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। তিনি বলেন, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ থেকে শুরু করে বাংলার প্রতিটি ঘর অনিরাপদ। আমরা মা বোন কণ্যাদের নিয়ে শঙ্কিত। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি আমাদের অভিভাবক। ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করুন।

দৈনিক সময়ের আলো পত্রিকার রিপোর্টার স্বপ্না চক্রবর্তীর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন, মশিউর রহমান খান, মানিক লাল ঘোষ, সমীরণ রায়, রুবিনা ইয়াসমিন, আবিদ আজমসহ শতাধিক গণমাধ্যমকর্মী এসময় উপস্থিত ছিলেন।