* পাঁচ জেলার নির্বাচনী ভার্চুয়ালি আওয়ামীলীগের জনসভা
মিরর বাংলাদেশ : আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি মানুষকে মানুষ হিসেবে গণ্য করে না। মানুষ হিসেবে গণ্য করলে রেলে আগুন দিয়ে কীভাবে মানুষকে পুড়িয়ে মারল? একটা মা তার ছোট বাচ্চাকে বাঁচানোর জন্য বুকে ধরে রেখেছিল, সেই অবস্থায় মরে কাঠ হয়ে গেল! বাসের ভেতরে হেলপার ঘুমিয়ে ছিল, আগুন দিল, হেলপার পুড়ে শেষ! ঠিক ১৩ ও ১৪ সালের মতো এবারও একই ঘটনা তারা (বিএনপি) ঘটিয়ে চলেছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে তেজগাঁওয়ে অবস্থিত ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় থেকে পাঁচ জেলার নির্বাচনী জনসভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপির জন্ম হয়েছে কার দ্বারা? অবৈধভাবে সংবিধান লঙ্ঘনকারী, সেনা আইন লঙ্ঘনকারী, ক্ষমতা দখলকারী এক জেনারেলের পকেট থেকে। জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছিলেন। হ্যাঁ-না ভোটের কার্যক্রম শুরু করেছিলেন। ক্ষমতায় বসে থেকে একদিকে সেনাপ্রধান, আরেকদিকে রাষ্ট্রপ্রধান, আবার নির্বাচনও করেছে। এটা সেনা আইন বিরোধী। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীর পকেট থেকে বের হওয়া একটা দল বিএনপি। তাদের কাজের সবকিছুই অবৈধ।
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০০১ সালের নির্বাচনে আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর নির্মম অত্যাচার করা হয়েছিল। যারাই নৌকায় ভোট দিয়েছিল তারাই নির্যাতনের শিকার হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অতীতে জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে ক্যান্টনমেন্টে বন্দি করা হয়েছিল। জনগণের অধিকার জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিতে হবে; এই প্রত্যয় নিয়েই সংগ্রাম করেছি। অনেক সংগ্রাম, ঘাত-প্রতিঘাত আমাদের পার করতে হয়েছে। আওয়ামী লীগের অগণিত নেতাকর্মীকে অত্যাচারের শিকার হতে হয়েছে, কারাগারে যেতে হয়েছে। তারপরও সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা ২১ বছর পরে ক্ষমতায় আসি। জনগণের সেবক হিসেবে যাত্রা শুরু করি। ৯৬ থেকে ২০০১ সাল ছিল ৭৫-এর পরে বাংলাদেশের মানুষের জন্য স্বর্ণযুগ।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকা মার্কায় ভোট চেয়ে দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, নৌকা নূহ নবীর নৌকা, বিপদে মানুষের একমাত্র বাহন হচ্ছে নৌকা। এখনও রাস্তাঘাট যতই করি, বন্যা হলে উদ্ধার করতে নৌকাই ভরসা, সেটা মাথায় রাখতে হবে।
বাংলাদেশে ভোটের অধিকার আওয়ামী লীগই প্রতিষ্ঠিত করেছে দাবি করে শেখ হাসিনা বলেন, সেটা অব্যাহত থাকবে। আপনাদের সতর্ক থাকতে হবে। কেউ যাতে সংঘাত-সন্ত্রাস করতে না পারে সেদিকে সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।
৭ জানুয়ারির দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, জনগণ ভোট দেবে, ভোটের মালিক জনগণ। এটা তাদের সাংবিধানিক অধিকার। আমরা এটা উন্মুক্ত করেছি, আমাদের নৌকার প্রার্থী আছে, স্বতন্ত্র প্রার্থীও আছে, অন্যান্য দলও আছে। প্রত্যেকে জনগণের কাছে যাবেন, জনগণ যাকে ভোট দেবে সে-ই নির্বাচিত হবে। কেউ কারও অধিকারে হস্তক্ষেপ করবেন না। এখানে কোনও রকম সংঘাত-সহিংসতা আমি দেখতে চাই না। কোনও সংঘাত হলে, দলের কেউ যদি করে তাদের রেহাই নেই। যথাযথ ব্যবস্থা নেবো। সেটা মনে রাখবেন।
জনগণ ভোটের অধিকার নির্বিঘেœ প্রয়োগ করবেÍএমন প্রত্যাশার কথা জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, তারা যাকে খুশি তাকে পছন্দ করবে, তাকে ভোট দেবে, সে-ই জয়ী হয়ে আসবে। গণতন্ত্রকে আরও সুদৃঢ় আমাদের করতে হবে। এর যদি ব্যত্যয় ঘটে, ভবিষ্যতে কী হবে? বাংলাদেশ শেষ হয়ে যাবে। বাংলাদেশে যতটুকু উন্নতি করেছি, তা থাকবে না।
এ সময় দেশের উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে নৌকা মার্কায় ভোট চান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, নির্বাচন নিয়ে যাতে কেউ কোনও অভিযোগ আনতে না পারে, শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন করবেন। নির্বাচনে জনগণের অংশগ্রহণ থাকতে হবে। ভোটারের অংশগ্রহণ থাকতে হবে। কোন দল আসলো না আসল তাতে কিচ্ছু যায় আসে না। ওরা তো ভোট চুরির সুযোগ না থাকায় আসেনি। বিএনপি আসেনি একটাই কারণ, ভোট চুরির সুযোগ নেই তাই। ২০০৮ সালে পারে নাই, তাই এখন ভোট বাতিল করতে চায়, বর্জন করতে চায়। সেটা তাদের ইচ্ছা, যার যার দলের ইচ্ছা। আমরা নির্বাচনে বিশ্বাস করি, জনগণের ক্ষমতায়নে বিশ্বাস করি। জনগণের ক্ষমতায়ন আমরাই নিশ্চিত করেছি।
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন করবেন। নিজের দলের মধ্যে ঐক্য রাখবেন। যত প্রার্থী আছে সবাই জনসংযোগ করুক স্বাধীন মতো। জনগণকে সুযোগ দেবেন তাদের পছন্দের মতো প্রার্থী নির্বাচিত করতে। তাতে গণতন্ত্র আরও বেশি শক্তিশালী হবে। যারা নির্বাচনে এসেছে তাদের ধন্যবাদ জানাই