কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে শহীদের রক্তের সাথে বেইমানি হবে : ডা: শফিকুর রহমান

220

*  শহীদ সুমাইয়ার অবুঝ শিশুর দায়িত্ব নিলেন জামায়াত

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি :
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ড. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘এখন যদি কেউ আবারো এলাকায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে তাহলে তা শহীদের রক্তের সাথে বেইমানি হবে।’
এলাকাবাসীর নিকট অনুরোধ করে তিনি বলেন, ‘যারা লুটতরাজ, চাঁদাবাজি করতে আসবে তাদেরকে কোনো ছাড় দিবেন না। ছাড় দেয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না। এবার জনগণ প্রমাণ করে দিয়েছে তারা অন্যায়ের সাথে কোনো আপস করে না।’
বুধবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের পাইনাদী দোয়েল চত্বর এলাকায় কোটা আন্দোলনের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করা তরুণী সুমাইয়ার মায়ের বাড়িতে এসে তিনি এসব কথা বলেন।
আমিরে জামায়াত বলেন, ‘আমরা এখানে এসেছিলাম শহীদ বোন সুমাইয়ার অবুঝ শিশুকে দেখতে। যার মুখে এখনো ভাষা ফুটে নাই। এই শিশুর যখন মুখে ভাষা ফুটবে তখন তার মা ডাকার মতো কেউ রইলো না। এই শিশুর মতো যারা মা হারিয়েছে, যারা বাবা হারিয়েছে, যারা নিজেদের সন্তানদের হারিয়েছে আল্লাহর কাছে দোয়া করি আল্লাহ যেন তাদের ধৈর্য্য ধারণ করার ক্ষমতা দেন।’
সুমাইয়ার মেয়ে সুয়াইবার দায়িত্ব নেয়ার কথা জানিয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি আরো বলেন, এই অবুঝ বাচ্চার এখন থেকে বড় হওয়া পর্যন্ত যাবতীয় দায়িত্ব আমরা নিলাম।’
ডা.শফিক আরো বলেন, ‘যারা জালিমের হাতে মৃত্যুবরণ করলেন আল্লাহ তাদের শহীদের মর্যাদা দান করুন। তারা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে প্রমাণ করলো তারা দেশে শান্তি চায়। আমরা যেন দেশে শান্তি ফিরিয়ে আনতে পারি আল্লাহ আমাদের সেই তৌফিক দান করুন।’
সরকার পতনের পর যারা বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত হয়েছে তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘যারা এসব অপকর্মে জড়িত হচ্ছেন তাদের বিনয়ের সাথে বলবো আপনারা শিক্ষা নেন, এখনো মানুষের বুকের চাপা কষ্ট দূর হয়নি। বাড়াবাড়ি যারাই করবেন জনগণ তাদের উচিত শিক্ষা দেবে।’
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা অঞ্চল দক্ষিণ পরিচালক সাইফুল আলম খান মিলন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা মঈনুদ্দীন আহমাদ, নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর আমির মাওলানা আবদুল জব্বার, জেলা জামায়াতের আমির আলহাজ্ব মুমিনুল হক, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট হেলাল উদ্দিন, মহানগরী নায়েবে আমির মাওলানা আবদুল কাইয়ুম, মহানগরী সেক্রেটারি ইঞ্জিনিয়ার মানোয়ার হোসাইন, জেলা সেক্রেটারি জাকির হোসাইন, মহানগরী সহকারী সেক্রেটারি মো: জামাল হোসাইন, মাওলানা শিহাব উদ্দিন, ছাত্রশিবির নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর সভাপতি আসাদুজ্জামান রাকিব, সেক্রেটারি ইসমাইল হোসাইন, জামায়াতের নেতা সাঈদ তালুকদার, হাফেজ আব্দুল মোমিন, কফিল উদ্দিন, মোস্তফা কামাল, অ্যাডভোকেট নিজাম উদ্দিনসহ জামায়াত ও শিবিরের অন্যন্য নেতৃবৃন্দ।
উল্লেখ্য, গত ২১ জুলাই সিদ্ধিরগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী আর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ চলছিল। এমতাবস্থায় মিজমিজি পাইনাদী দোয়েল চত্বর এলাকায় দৌড়াদৌড়ির আওয়াজ শুনে মায়ের ঘরের বারান্দায় দাঁড়িয়ে বাহিরের দৃশ্য দেখছিলেন সুমাইয়া। এ সময় একটি গুলি জানালার এসএস পাইপ ছিদ্র করে তার মাথার বাম পাশে লাগে। এ সময় ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।