গৃহবধূকে বিবস্ত্র-নির্যাতন: যেভাবে গ্রেপ্তার হলো দেলোয়ার-বাদল

583

মিরর প্রতিনিধি  নারায়ণগঞ্জ :

রাতের বেলা পালাতে গিয়ে পিস্তল, ম্যাগজিন ও ২ রাউন্ড গুলিসহ র‌্যাবের জালে গ্রেপ্তার হয়েছেন ‘নোয়াখালীতে বিবস্ত্র করে নারী নির্যাতন’ করার মামলায় অন্যতম আসামী দেলোয়ার হোসেন। সে দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান।

রোববার রাত ২টা ৩০ মিনিটের দিকে র‌্যাব-১১ সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাংরোড এলাকায় থেকে দেলোয়ারকে গ্রেপ্তার করেন।

পরে তার দেওয়া তথ্যে ভোর সাড়ে ৫টায় ঢাকা জেলার কামরাঙ্গীচর ফাড়ির গলি এলাকা থেকে চাঞ্চল্যকর এই নারী নির্যাতনের ঘটনার প্রধান আসামী মো. নুর হোসেন বাদলকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আজ সোমবার দুপুর ১টায় নারায়ণগঞ্জ আদমজী নগর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ সকল তথ্য তুলে ধরেন র‌্যাব-১১ অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল খন্দকার সাইফুল আলম।

‌নোয়াখালী স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই নারীর ১৮ বছর আগে বিয়ে হয়। তার স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করায় কয়েক বছর আগে তিনি বাপের বাড়ি চলে আসেন। তার এক ছেলে ও মেয়ে আছে। মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। বাড়িতে ওই নারী ছেলে ও এক ভাইয়ের সঙ্গে থাকতেন। গত ২ সেপ্টেম্বর গৃহবধূর সঙ্গে দেখা করতে আসেন তার স্বামী। এ সময় অপরিচিত লোক দাবি করে তাকে বেঁধে রাখে স্থানীয় বখাটেরা।

র‌্যাব-১১ জানান, ২ সেপ্টেম্বর রাতের বেলায় ওই নারীর ঘরের ভেতর ঢুকে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ থানার একলামপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়াডে মধ্যযুগীয় কায়দায় বিবস্ত্র করে নির্যাতন করে ভিডিও ধারণ করা হয়। পরবর্তীতে গত ৪ অক্টোবর ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে। দেশব্যাপী ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। নির্যাতনের ঘটনার ৩৩ দিন পর ১৯ জনকে আসামি করে ৪ অক্টোবর রাত ১টার দিকে ধর্যণের চেষ্টার অভিযোগে মামলা করেন নির্যাতিতা গৃহবধূ। পাশাপাশি ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে আরও একটি মামলা হয়।

র‌্যাব-১১ অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল খন্দকার সাইফুল আলম জানান, মামলার পর থেকেই র‌্যাব ব্যাপকভাবে গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করে। র‌্যাব অস্ত্রসহ প্রথমেই রাতে আটক করা হয় সন্ত্রাসী দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার হোসেনকে। পরে তার দেওয়া তথ্যে ঢাকা জেলার কামরাঙ্গীচর ফাড়ির গলি এলাকা থেকে চাঞ্চল্যকর নারী নির্যাতনের ঘটনার প্রধান আসামী মো. নুর হোসেন বাদলকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার দায় স্বীকার করেছেন আটককৃতরা। ‘দেলোয়ার বাহিনী’ এলাকায় চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা এবং নানান সন্ত্রাসী কার্যকলাপের সাথে জড়িত এবং দেলোয়ার এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী। তাদের ভয়ে এলাকার লোকজন ভীত সন্ত্রস্ত। এই ঘটনায় জড়িত অন্যান্য অপরাধীদের গ্রেপ্তারে র‌্যাবের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।

এদিকে, গৃহবধূকে বেঁধে বিবস্ত্র করে নির্যাতন, শ্লীলতাহানি ও ধর্ষণচেষ্টার ঘটনায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিও সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।