জুমার নামাজ গরিবের ঈদের দিন

518

মুহা: ইউসুফ আল আজিজ :

প্রতিটি ধর্মপ্রাণ মুসলমানের জন্য জুম্মা মোবারক ছোট ঈদ নামে পরিচিত। আবার অনেকেই আছেন যারা বলে থাকেন শুক্রবার জুমার নামাজ গরিবের ঈদের দিন। তাই বর্তমানে এই দিনটিকে ঘিরে সকল আয়োজন আর তাকওয়া ও বিশেষ আমলের মহান রবের সন্তুষ্টি লাভে সচেষ্ট থাকাই বুদ্ধিমানের কাজ।
ইয়াওমুল জুমা। মুসলমানদের সাপ্তাহিক ইবাদতের শ্রেষ্ঠ দিন। এ দিন সুনির্দিষ্ট হুকুম ও শর্ত মেনেই জুমার নামাজ পড়তে হয়। নামাজসহ বিশেষ ‍কিছু ইবাদত-বন্দেগিও রয়েছে এ দিন। জুমার নামাজ পড়ার হুকুম ও শর্তগুলো হলো-:-
মুসলিম উম্মাহর জন্য সপ্তাহিক ফজিলতপূর্ণ ফরজ নামাজ জুমা। জোহরের সময় ২ রাকাত জুমা নামাজ আদায়ে রয়েছে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ শর্ত ও হুকুম। যেসব হুকুম ও শর্তগুলো পাওয়া গেলে জুমা আদায় করতে হয়। তাহলো-জুমার হুকুম
১. জুমা নামাজ দুই রাকাত আদায় করতে হয়। প্রত্যেক মুসলিম, প্রাপ্তবয়স্ক, বিবেকবান, স্বাধীন এবং সুনির্দিষ্ট জনপদে স্থায়ীভাবে বসবাস করে এমন ব্যক্তির উপর জুমা নামাজ আদায় করা ফরজ।
২. জুমা নামাজ নারী, রোগী, শিশু, মুসাফির ও দাস-দাসীর উপর ফরজ নয়। তবে এদের মধ্যে যারা জুমার নামাজে হাজির হবে তা তাদের জন্য যথেষ্ট হয়ে যাবে।
৩. মুসাফির তথা ভ্রমণকারী ব্যক্তি যদি কোনো স্থানে যাত্রা বিরতি করে এবং সেটি জুমার নামাজের সময় হয় কিংবা জুমার নামাজের আজান শুনতে পায় তবে তার জন্য জুমা আদায় করা জরুরি।

#জুমার দিনে মুসল্লি ও ইমাম সাহেবগনের প্রতি করণীয় দৃষ্টিআকর্ষন:-
*. জুমা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে (জোহর নামাজের ওয়াক্তে) আদায় করা ওয়াজিব।
* যেখানে জুমা অনুষ্ঠিত হবে সে জনপদের কমপক্ষে দুই বা তারও বেশি নামাজির উপস্থিতি আবশ্যক।
* জুমার নামাজের আগে খুতবা দিতে হবে।
* জুমার নামাজর খুতবায় আল্লাহর প্রশংসা, তাঁর জিকির, স্মরণ ও শুকরিয়া থাকতে হবে।
* জুমার খুতবায় উপস্থিত ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের দ্বীন ইসলাম তথা আল্লাহ ও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়া সাল্লামের আনুগত্যের দিকে আহ্বান, উৎসাহ প্রদান করতে হবে।
* আল্লাহর একত্ববাদ, নবিজী হযরত মুহাম্মাদ (সা:) সহ নবি-রাসুলদের রেসালাত এবং পরকালের ব্যাপারে নসিহত করতে হবে।
* তাকওয়া তথা আল্লাহর ভয় সম্পর্কে নসিহত করতে হবে।
* জুমার নামাজ আদায়কারীর জন্য জোহরের পড়ার প্রয়োজন নেই। জুমা-ই জোহরের জন্য যথেষ্ট।
* জুমার নামাজের হেফাজত করা ফরজ। অর্থাৎ যথা সময়ে জুমা আদায় করতে হবে এবং জুমার নামাজ পড়ার জন্য আগে আগে মসজিদে চলে যাওয়াও আবশ্যক। আর এতে রয়েছে অনেক ফজিলত।
* বিশ্ব মুসলিম নারী- পুরুষের শান্তি কামনায় বিশেষ প্রার্থনা করা।
* সামর্থ অনুযায়ী নিরীহ অসহায়দের জন্য ব্যয় করা।

* জুমাবার শুরু হয় বিঙ্গজনের/চাঁদের হিসাব মতে বৃহস্পতিবার দিনের শেষ হতেই।
** বিশেষ কিছু সংহ্মিপ্ত আমল :-
১. ফজর সালাত জামাতে আদায় করার মধ্য দিয়ে দিনের শুরু করা।
২. দিনের শুরুতে সূরা- কাহাফের প্রথম দশ আয়াত তেলাওয়াত করা।
৩.জুমার নামাজ শেষে সূরা – কাহাফ সম্পূর্ণ তেলাওয়াত করা ( যাতে আল্লাহ পরবর্তী জুমা পর্যন্ত তেলাওয়াত কারীকে বালা মুসিবত থেকে হেফাজতে রাখেন)।
৪. বাদ আসর ( আল্লাহুম্মা সাল্লি আ’লা সয়্যিদিনা মুহাম্মাদানিন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি ওয়ালা আলিহি ওয়া সাল্লিমু তাছলিমা) ৮০ বার এই দরুদ পাঠ করার কারণে আল্লাহ তায়ালা ৮০ বছরের গুনাহ মাপ করে দেন।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে তাদের সাপ্তাহিক সেরা ইবাদতের দিন জুমার নামাজ পড়াসহ অন্যান্য ইবাদত-বন্দেগিতে দিনটি অতিবাহিত করার মধ্যদিয়ে তাকওয়া ও ঈমান সুদৃঢ় করার এবং মোনাফেকি থেকে বেঁচে থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।

লেখক  : নির্বাহী সম্পাদক, মিরর বাংলাদেশ ডট কম