প্রয়োজনে জেলে যাবো,আ’লীগের পালানোর ইতিহাস নেই : ওবায়দুল কাদের

245
ছবি : ওবায়দুল কাদের

মিরর বাংলাদেশ : ‘আওয়ামী লীগ পালানোর পথ পাবে না’, বিএনপি নেতাদের এমন কথার জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘আপনারা প্রতিদিনই সরকারের পতন দেখতে পাচ্ছেন। প্রতিদিনই বলে সরকার পালিয়ে যাবে। কোথায় পালাব? আওয়ামী লীগের পালানোর ইতিহাস নেই, প্রয়োজনে জেলে যাব।’ ‘আওয়ামী লীগ মাঠে নামলে বিএনপির আন্দোলন কর্পূরের মতো উড়ে যাবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে ]বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলটির সঙ্গে সহযোগী সংগঠনের জরুরি সভায় তিনি এসব কথা বলেন। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, সম্পাদকমÐলীর সদস্য মাহবুব-উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন, আফজাল হোসেন, ফরিদুন্নাহার লাইলী, বিপ্লব বড়ুয়া, সুজিত রায় নন্দী, আমিনুল ইসলাম, সায়েম খান, কার্যনির্বাহী সদস্য রিয়াজুল কবির কাওছারসহ সহযোগী, ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তরের নেতারা।
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের দেশ বাংলাদেশ। পালানোর ইতিহাস আমাদের নেই। প্রয়োজনে দেশের মাটিতে জেলে যাব। আওয়ামী লীগ পলাবার দল নয়। পালাবার দল আপনারা (বিএনপি)। আপনাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান কোথায়? তিনি জরুরি সরকারের কাছে মুচলেকা দিয়ে এখান থেকে পালিয়ে গেছেন। আওয়ামী লীগকে পালানোর কথা বলছেন?’ এসময় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘সবাই প্রস্তুত আছেন? আছেন মাঠে? খেলা হবে, মোকাবিলা হবে।’
জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে বিরোধীদের কর্মসূচি প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এটাতো গণতন্ত্রের বিষয়। আমরা তাদের বাধা দেব কেন? তারা যদি এই আন্দোলনের সঙ্গে সহিংসতার উপাদান যুক্ত করে। আগুন সন্ত্রাস নিয়ে মাঠে নামলে আমরা নীরব হয়ে বসে থাকব? ঘরে বসে থাকব? আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা কি আঙুল চুষবে? প্রতিরোধ করতে হবে। রাজপথে মোকাবিলা হবে।’
১৪ দলীয় জোট কৌশলগত, আদর্শিক নয়
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটকে নির্বাচনী জোট হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন ক্ষমতাসীন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি জানান, এই জোট তাদের নির্বাচনী অ্যালায়েন্স, কৌশলগত জোট। এখানে আদার্শের কোনো বিষয় নেই।
জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় জোটের শরিকরা আন্দোলনকে কীভাবে দেখছে আওয়ামী লীগ এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘জোটের শরিকদের দলগতভাবে কর্মসূচি দেওয়ার অধিকার আছে। তারা করতে চাইলে করবে। এটা তো কোনো কথা না।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের জোট তো আমাদের নির্বাচনী জোট। সেটা তো কৌশলগত জোট। সেখানে আদর্শের কোনো বিষয় নেই। তাহলে জাতীয় পার্টির সঙ্গে আমরা কেন জোট করেছি? এসব ব্যাপারতো ভাবতে হবে।’
জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার বিষয়ে দলীয় ফোরামে আলোচনা হয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এটা সরকারের ব্যাপার। এটা দলীয় মিটিংয়ে আলোচনা হয়ে করে না।’
তিনি বলেন, ‘সারা দুনিয়ার পরিস্থিতি বাংলাদেশের সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া সবকিছু জেনেশুনে এটা করা হয়েছে …আমরা আগেই বলেছি এটা আমরা বাধ্য হয়ে নিরুপায় হয়ে করেছি। মানুষকে আমরা কষ্ট দিতে চাইনি। কিন্তু আমাদের সামনে অন্য কোনো বা বিকল্প কোনো পথ ছিল না। এটা প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বিশ্বাবাজারে তেলের দাম কমলে ঠিক তখনই আমরা তেলের দাম কমাব। দেশে চারবার আমরা দাম কমিয়েছি। এই উদাহারণ নেই।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আজকে বিশ্ব পরিস্থিতির কারণে এই পরিস্থিতি হয়েছে। যখন স্বাভাবিক সময় আসবে তখন আমাদের প্রমিজ থেকে পিছিয়ে যাব না।তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি মূল্য কমলে আমরাও এখানে সমন্বয় করব। এটা বলার পরও আজকে বিএনপিসহ তাদের দোসররা আজকে মাঠে নেমেছে এবং সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত মিথ্যচার করছে, বিষোদগার করছে। জ্বালানি তেলের মূল্য নিয়ে নানান কথা বলছে। ৮ হাজারেরও বেশি টাকা বাংলাদেশ ভর্তুকি দিয়েছে। আর কতো ভর্তুকি? তারপরও আমাদের নেত্রী বলেছেন, আপনারা একটু ধৈর্য ধরুন। আমার তো মনে হয় এই সংকট থেকে তিনি মুক্তি দিতে পারবেন। সেই আত্মবিশ্বাস আমাদের নেত্রীর রয়েছে। তিনি বলেন, ‘আজকের সংকট সাময়িক। এই সংকট কেটে যাবে এবং এই সংকট উত্তরণের জন্য সবকিছুই প্রধানমন্ত্রী করে যাচ্ছেন।’