বিদেশিদের লাফালাফিতে এদেশে নির্বাচন বানচাল হবে না : প্রধানমন্ত্রী

295

জেল হত্যা দিবসে আওয়ামীলীগের আলোচনা সভা

* বিএনপি কাকে নিয়ে নির্বাচন করবে ?

মিরর বাংলাদেশ : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি কাকে নিয়ে নির্বাচন করবে? নির্বাচন করলে তাদের নেতা কে? কাকে প্রধানমন্ত্রী করবে? কাকে দিয়ে মন্ত্রিসভা করবে? বিএনপি চেয়ারপারসন, সে তো এতিমের টাকা আত্মসাতের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। আর এখন তো অসুস্থ। ওরা (বিএনপি) জানে নির্বাচন করলে ওরা কোনোদিন ক্ষমতায় আসতে পারবে না। ২০১৮ নির্বাচনে তো মাত্র ২৯টা সিট পেয়েছিল। এখন তাদের অপকর্মের জন্য মানুষ আরও বিমুখ।
শুক্রবার জেলহত্যা দিবস উপলক্ষ্যে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আলোচনা সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপির যে অগ্নিসন্ত্রাস, তাদের যে বীভৎস চেহারা, তারা যে পিটিয়ে পিটিয়ে পুলিশ হত্যা করে, একজন নিরীহ পুলিশ চাকরি করে, তার কি অপরাধ ছিল? তাকে ওইভাবে, অমানবিকভাবে হত্যা করল। ২০১৩ সালে ঘটিয়েছে, ২০১৪ সালের নির্বাচন বানচাল করার জন্য একই ঘটনা ঘটিয়েছে। ২০১৫ তে ঘটিয়েছে। হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করা, আগুনেও পোড়ানো, হাজার হাজার গাছ কেটে রাস্তা কেটে একটা ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছিল। বাংলাদেশের জনগণ যখন প্রতিরোধ করেছিল তখনই তারা থেমেছে।
তিনি বলেন, এখন আমি বলব সময় এসে গেছে, এই অগ্নিসন্ত্রাসীরা যে যেখানে থাকুক, যারাই এভাবে আগুন দেবে, জনগণের ওপর অত্যাচার করবে, গাড়ি-বাস-ট্রাকে আগুন দেবে, সঙ্গে সঙ্গে তাদের প্রতিরোধ করতে হবে। কারো ওপর নির্ভর করলে হবে না, জনগণকে এগিয়ে আসতে হবে।
ফিলিস্তিনে ইসরাইলি হামলার নিন্দা না জানানোয় বিএনপি-জামায়াতের সমালোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের মানুষ কতটা দুর্দশার মধ্যে আছে। হামলায় কত মানুষ মারা যাচ্ছে। নারী-শিশুরাও রক্ষা পাচ্ছে না। এ বিষয়ে তারা চুপ করে আছে। তাদের কোনো প্রতিবাদ দেখেছেন?
প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন রেখে বলেন, তারা কাদের পদলেহন করে বাড়াবাড়ি করছে? তারা কাদের স্বার্থ দেখে, এটাই আমার প্রশ্ন। ফিলিস্তিনিদের সমর্থনের কথা পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, আমরা ফিলিস্তিনের সাধারণ মানুষের জন্য সাহায্য পাঠিয়েছি। তাদের স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে আমাদের অবস্থান।
বিএনপি-জামায়াতের অগ্নিসন্ত্রাসের প্রতিবাদ করে সরকারপ্রধান বলেন, যে হাত দিয়ে তারা বাসে আগুন দেয় সেটি ভেঙ্গে দিতে হবে। যেমন কুকুর তেমন মুগুর। তাদের আগুন সন্ত্রাস রুখে দাঁড়াতে হবে।
জাতীয় নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, বিদেশিদের লাফালাফিতে এদেশে নির্বাচন বানচাল হবে না। নির্বাচন সঠিক সময়েই হবে। নেতাকর্মীদের সতর্ক করে দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, সামনে নির্বাচন। বহু ষড়যন্ত্র হবে নির্বাচন বানচালের। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থেকে ভোটের প্রস্তুতি নিতে হবে। যাকে মনোনয়ন দেওয়া হবে তার পক্ষেই কাজ করতে হবে।
বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে কিনা সেটি নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন সরকারপ্রধান। বলেন, অগ্নিসন্ত্রাসীরা নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করতে চাইলে তাদের রুখে দাঁড়াতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের কোনো মুরুব্বি নেই। আমাদের আছে বাংলাদেশের জনগণ। তাদের নিয়েই আমাদের এগোতে হবে।
কারা মজুত করে জনগণের পকেট কাটার চেষ্টা করছে তাদের খুঁজে বের করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, সবজি আমাদের দেশে উৎপাদন হয়। এটা বাজারে না এনে রেখে দেবে। দাম বাড়িয়ে দেবে। কারা মজুত করে জনগণের পকেট কাটার চেষ্টা করছে খুঁজে বের করতে হবে।
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের শেখ হাসিনা বলেন, সবাইকে যার যার এলাকায় ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। অগ্নিসন্ত্রাস যারা করে, তাদের ধরে ওই আগুনে ফেলতে হবে। যে হাতে আগুন দেয় ওই হাত পুড়িয়ে দিতে হবে। যেমন কুকুর তেমন মুগুর। তা না হলে তাদের শিক্ষা হবে না। প্রত্যেক এলাকায় কত বিএনপি-জামায়াত আছে, খুঁজে বের করতে হবে। এদের ধরিয়ে দিতে হবে। এরা যাতে মানুষের জান-মাল নষ্ট করতে না পারে।
তিনি বলেন, দুষ্কৃতিকারী কয়েকজনের লাফালাফিতে নির্বাচন বানচাল হবে না। তাদের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে দেওয়া হবে না। তারা নির্বাচনে আসবে কি না, জানি না। এলেও আসবে ওই নমিনেশন বাণিজ্য করতে।
মনোনয়ন নিয়ে বিভাজন না করার জন্য সতর্ক করে দিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমাদের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এ কথা ভাবলে চলবে না, ওরা (বিএনপি) তো আসবে না। একটা সিট না পেলে কী হবে! এ চিন্তা যেন কারো মাথায় না থাকে। আমরা মনোনয়নে যে সিদ্ধান্ত দেবো, সেটা মানতে হবে। আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থেকে আবারও ভোটের মাধ্যমে সরকারে আসতে হবে।