মিরর বাংলাদেশ : গ্যাস লিকেজ থেকে প্রায়ই ঘটছে বড় দুর্ঘটনা।অকাল অগ্নিদগ্ধ হয়ে প্রাণ হারায় মানুষ। তবে দূর্ঘটনা ঠেকাতে পারে গ্যাস ডিটেকটর যন্ত্র। বাসাবাড়িতে চাইলেই গ্যাস ডিটেকটর যন্ত্র বসানো যায়। এটি পাওয়া যায় বিভিন্ন ই-কমার্স সাইটেই। দাম ১২০০-২০০০ টাকার মধ্যে। রান্নাঘর বা গ্যাসের লাইন রয়েছে এমন স্থানে এটি স্থাপন করা যেতে পারে। লিকেজ হলেই বেজে উঠবে অ্যালার্ম। যাতে বড় দুর্ঘটনার আগেই লোকজন নিরাপদে সরে যেতে পারবে।তবে এমন যন্ত্র নেই কোন প্রচার প্রচারনা।
সাধারন মানুষ বলছে, যদি গ্যাস দূঘটনার আগাম তথ্য মানুষ পেয়ে যায় তাহলে অনেক প্রাণহানি ঘটবে না। এমনকি কমে যাবে গাসের দূর্ঘটনা। এ নিয়ে কোনও পরিকল্পনা আছে কিনা জানতে চাইলে তিতাস জানায়, এমন যন্ত্রের প্রচারণার দরকার আছে।
জানা যায়, এটি স্মোক ডিটেকটরের মতো ছোট একটি ডিভাইস। সার্বক্ষণিক বিদ্যুতের সঙ্গে যুক্ত রাখতে হয়। আবার ব্যাটারিতেও চলে। সাধারণত দুই ধরনের ডিটেকটর পাওয়া যায়। এর মধ্যে একটি যন্ত্র বাতাসে গ্যাসের ঘনত্ব মেপে অস্বাভাবিকতা ধরতে পারলেই সংকেত দেয়। অন্যটি স্থাপন করা হয় গ্যাসের চুলা ও গ্যাস লাইনের মাঝের ভালভে। লিকেজের সংকেত পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ওই ডিটেকটর স্বয়ংক্রিয়ভাবে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। অবশ্য মূল পাইপলাইনে লিকেজ হলে তা বন্ধ করতে পারে না এই ডিটেকটর। কিন্তু সংকেত দিতে পারে ঠিকই। একেক ধরনের গ্যাস শনাক্ত করতে পাওয়া একেক ধরনের ডিকেটর। তবে বাজারে মিথেন শনাক্তকারী যন্ত্রই পাওয়া যায় বেশি।
জানা গেছে , এলপিজি বাতাসের তুলনায় ভারী। তাই সিলিন্ডারের ক্ষেত্রে যন্ত্রটি সিলিন্ডারের আশেপাশে বা মেঝের কাছাকাছি রাখতে হয়। পাইপলাইনের গ্যাস তুলনামূলকভাবে হালকা। এটি লিক হলে ঘরের উপরের দিকে জমা হয়। এ কারণে পাইপলাইনের ডিটেকটর থাকবে সিলিংয়ে।
গত কয়েক বছরে দেশে এলপিজি ও গ্যাসলাইনের বড় বিস্ফোরণ ঘটেছে। অনেকে মারা গেছেন। মারাত্মক আহতও হয়েছেন অনেকে। সরকারের তরফ থেকে বিভিন্ন সময় সতর্কতার নির্দেশনা দেওয়া হলেও গ্যাস শনাক্তকারী যন্ত্রের কথা বলা হয়নি। সাধারণ মানুষের অনেকে জানেই না যে এমন যন্ত্র দেশেই আছে।
বিস্ফোরক পরিদফতরের জন্য প্রচার বাবদ অর্থ বরাদ্দ রাখা হয়। গুটিকয়েক লিফলেট ছাপানো ছাড়া আর কিছুই করতে দেখা যায় না।
গ্যাস বিস্ফোরণের ঘটনার পর সাধারণত তদন্ত করে বিস্ফোরক পরিদফতর। তাতে গতানুগতিক কিছু সুপারিশ থাকে বলে অভিযোগ আছে। বিশেষ কোনও প্রযুক্তি ব্যবহার করে ক্ষতি কমানো যায় কিনা সে বিষয়ে কোনও নির্দেশনা থাকে না। প্রথমবারের মতো মগবাজারের বিস্ফোরণের পর গ্যাস ডিটেকটরের বিষয়টি সুপারিশে উল্লেখ করে বিস্ফোরক পরিদফতর। তবে প্রধান বিস্ফোরক পরিদর্শক আবুল কালাম আজাদ এই যন্ত্রকে ‘কার্যকর নয়’ বলে মনে করেন।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান পরিদর্শক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘বাসাবাড়িতে এ ধরনের ডিটেকটর খুব বেশি কাজ করবে না। তার মতে, সাধারণ মানুষ এলপিজির ভালভই ঠিকমতো রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারে না। পাইপলাইনে গ্যাসের লিকেজের গন্ধও টের পায় না, তাদের পক্ষে ডিটেকটর ব্যবহার করা কঠিন হবে।’
তার মতে, ‘শিক্ষিত’দের পক্ষে বা যে গ্যাস স্টেশনগুলোতে ‘শিক্ষিত লোক’ কাজ করেন সেখানে এটি কার্যকর হতে পারে। সাধারণ মানুষদের আগে শিখতে হবে গ্যাসের গন্ধ কেমন সেটা। এমনকি তার মতে গ্যাস ডিটেকটর যন্ত্র স্থাপনে প্রশিক্ষণও দরকার।
এদিকে তিতাস গ্যাস ডিটেকটর স্থাপনের চিন্তা করছে। এই বিষয়ে তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী ইকবাল মো. নুরুল্লাহ বলেন, ‘সম্প্রতি কয়েকটি ঘটনার পর আমরা গ্যাস ডিটেকটর নিয়ে ভাবছি। গ্রাহকরা এটি কীভাবে ব্যবহার করবে সেটা নিয়েও আলোচনা হচ্ছে। তবে এটি প্রাথমিক পর্যায়ে আছে