সাংবাদিকতার ‘বাতিঘর’ আতাউস সামাদের ৮ম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

484

ছবি : মরহুম আতাউস সামাদ

সাদেকুর রহমান : আদর্শ ও নির্ভীক সাংবাদিকতার ‘বাতিঘর’ আতাউস সামাদের ৮ম মৃত্যুবার্ষিকী আজ শনিবার । ২০১২ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর ৭৫ বছর বয়সে বিবিসিখ্যাত এই সাংবাদিক চিরবিশ্রামে যান।
দলনিরপেক্ষ আতাউস সামাদ সম্পর্কে অনেক গুণী মানুষের এমন অনেক মূল্যায়ন রয়েছে, যা তিনি অর্জন করে গেছেন ৫৬ বছরের সাংবাদিকতায়। ১৯৫৬ সালে ‘সচিত্র সন্ধানী’ দিয়ে যার সাংবাদিকতা শুরু, মৃত্যুর আগমুহূর্তও ছিলেন এই পেশায়।
‘সচিত্র সন্ধানী’ থেকে দৈনিক ‘আজাদ’, ‘পাকিস্তান অবজারভার’, ‘দ্য সান’, ‘বাসস (বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা)’ হয়ে ১৯৮২ সালে আতাউস সামাদ যোগ দেন বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসে। প্রায় একযুগ বিবিসিতে সাংবাদিকতায় জনমানুষের আরো কাছে চলে আসেন এই বস্তুনিষ্ঠ ও জনদরদী সাংবাদিকতার দিকপাল। সাহসী সাংবাদিকতার কারণে তাকে গ্রেফতার করেছিলো স্বৈরাচার এরশাদ সরকার।
তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তান সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও নেতৃত্ব দিয়েছেন এই পেশায়। দীর্ঘ ২০ বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে খন্ডকালীন শিক্ষকতা করা আতাউস সামাদ আমার দেশ পত্রিকার উপদেষ্টা সম্পাদক এবং ২০০৭-’০৮ সালে দেশের অন্যতম জনপ্রিয় টেলিভিশন ‘এনটিভি’র সংকটকালীন সময়ে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবেও দায়িত্বপালন করেন।
বিলুপ্ত সাপ্তাহিক ‘এখন’ পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক ছিলেন তিনি। মগজে-মননে অনুসন্ধিৎসু আতাউস সামাদ পাকিস্তানের দৈনিক মুসলিম, কুয়েতের দৈনিক আরব টাইমস, লন্ডনের সাউথ ম্যাগাজিন, ক্রিশ্চিয়ান সায়েন্স মনিটরসহ এ দেশের স্বনামখ্যাত বিভিন্ন পত্রিকায় নিয়মিত লিখেছেন। ১৯৩৭ সালের ১৬ নভেম্বর কিশোরগঞ্জের সতেরদবিরা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন আতাউস সামাদ। তাঁর বাবার নাম আবদুস সামাদ ও মা শায়েরা বানু।
জলপাইগুড়িতে ছাত্র জীবন শুরু করা এই সাংবাদিক ইংরেজীতে মাস্টার্স করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ‘একুশে পদক (১৯৯২)’ সহ অসংখ্য পদক ও সম্মানে ভূষিত হন ‘এ কালের বয়ান’ গ্রন্থ লিখে সবকালের পাঠকের মন জয় করা সাংবাদিক আতাউস সামাদ।
শতভাগ পেশাদারিত্বের সাথে আমৃত্যু সাংবাদিকতা করে, কলাম লিখে এদেশে সবার শ্রদ্ধার আসনে আসীন আতাউস সামাদ। গণতন্ত্রমনা এই সাংবাদিক সর্বদাই সকল অনাচারের বিরুদ্ধে কলমী লড়াই চালিয়ে গেছেন। এমন এক কর্মবীর কলম সৈনিকের প্রতি বিন¤্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি। একই সাথে দোয়া করছি, মহান করুণাময় আল্লাহ যেন তাঁর সকল ভালোকাজ কবুল করে নিয়ে তাঁকে সর্বোচ্চ জান্নাতের বাসিন্দা হিসেবে কবুল করেন। আমীন! ##