জেলা-উপজেলা পর্যায়ে করোনা ভ্যাকসিন দিতে সর্বাত্মক প্রস্তুতি রয়েছে জানিয়ে ঢাকা জেলার সিভিল সার্জন ডা. আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান বলেছেন, এ মাসেই করোনা ভ্যাকসিনের প্রথম চালান দেশে এসে পোঁছাবে। প্রথম ডোজ শেষ হওয়ার দুই মাসের মধ্যে দ্বিতীয় ডোজ চলে আসবে বলে আমরা আশা করছি।
বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর আজিমপুরে সিভিল সার্জন অফিসের জনসংখ্যা ভবনে অনুষ্ঠিত ‘কোভিড-১৯ ও ডেঙ্গু বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে জেলা পর্যায়ে অ্যাওয়ারনেস প্রিভেনশন অব সিডিসি’- বিষয়ক এক কর্মশালায় তিনি এ কথা বলেন।
ভ্যাকসিন সংরক্ষণ ও জেলা-উপজেলা পর্যায়ে দেওয়ার প্রস্তুতি কেমন জানতে চাইলে ঢাকা জেলার সিভিল সার্জন বলেন, আমাদের স্টোরেজ, ম্যানপাওয়ার সবকিছুই পর্যাপ্ত রয়েছে। ২ থেকে ৮ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড ভ্যাকসিনের স্টোরেজ তাপমাত্রার পর্যাপ্ত ফ্রিজ রয়েছে। জেলা লেবেলে ওই মানের আমাদের ৩৮টি ফ্রিজসহ প্রয়োজনীয় ডিপফ্রিজ রয়েছে। পর্যাপ্ত ট্রান্সপোর্টের ব্যবস্থাও আছে। ক্যারিয়ার বক্সে নিরাপদে ভ্যাকসিন জেলা উপজেলায় পৌঁছানো হবে।
প্রশিক্ষিত কর্মী ছাড়া ভ্যাকসিন দেয়ার অনুমোদন দেওয়া হবে না জানিয়ে সিভিল সার্জন বলেন, যারা দেবেন তাদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রশিক্ষণ দিয়েই তাদের কাজে নামানো হবে। এজন্য আমাদের জাতীয় কমিটির অধিনে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কমিটি কাজ করছে।
অগ্রাধিকার ভিত্তিকে ভ্যাকসিন কারা পাচ্ছেন এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান বলেন, করোনায় যারা ফ্রন্টযোদ্ধা তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। সরকারি চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মী, বেসরকারি অনুমোদিত স্বাস্থ্যকর্মী, আইনশৃঙ্খলাবাহিনী, গণমাধ্যমকর্মী, মুক্তিযোদ্ধা, জনপ্রতিনিধি, উপজেলা প্রশাসনসহ স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, যক্ষা, ডায়াবেটিসসহ জটিলরোগী, বয়সভিত্তিক বিশেষ করে ৬৫ থেকে ৮০ উপরে, জাতীয় খেলোয়াড়সহ বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ।
তিনি বলেন, তৃণমূল থেকে সাধারণ মানুষকে উপজেলা পর্যায়ের প্রত্যেক ইউনিয়নের আইটি সেন্টার থেকে রেজিস্ট্রেশন করিয়ে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। আশা করি, করোনা রেজিস্ট্রেশনের জন্য যে অ্যাপটা সেটা সহজে মানুষ তথ্য দিতে পারবে।
বায়োটেকনোলজি ফার্ম এর ভ্যাকসিন কি পর্যায়ে রয়েছে জানতে চাইলে ঢাকার সিভিল সার্জন বলেন, তারা এখনও ট্রায়ালে যায়নি। ইতিমধ্যে তাদের প্ল্যান্ট পরিদর্শন করা হয়েছে। করোনা রোধে এই ভ্যাকসিন সক্ষমতা প্রমাণ করতে পারলে আমরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সেটাই গ্রহণ করবো। তখন আর সেরামের ভ্যাকসিন হয়তো দরকার হবে না।
সিভিল সার্জন বলেন, বৈশ্বিক ক্রাইসিসের কারণে দ্রুত সময়ের মধ্যে ভ্যাকসিন নিয়ে আসা হয়েছে। কিছুটা ঝুঁকি তো আছেই। তারপর বিভিন্ন দেশের প্রেসিডেন্টরা নিজেরাই ভ্যাকসিন নিয়ে জনগণকে আস্থা অর্জনে এবং ভ্যাকসিন গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করেছেন। ভ্যাকসিন শতভাগ ঝুঁকিমুক্ত এটা বলার আসলে সুযোগ নেই। এর মধ্যেই আমাদের ভ্যাকসিন নিতে হবে। তবে আশার কথা হলো ইতিমধ্যেই বিভিন্ন দেশে এমনকি যে দেশ থেকে আমরা ভ্যাকসিন নিয়ে এসেছি, তারা আমাদের আগেই ভ্যাকসিন গ্রহণ করা শুরু করেছে। কোনো জটিলতা হলে আমরা আগেই বুঝতে পারবো। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগও আছে। তিনি ভ্যাকসিনের ব্যবহারসহ করোনারোধে সচেতনতায় গণমাধ্যমকর্মীদের সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করেন।